ডিমের ডজন দেড়শো, দাম বাড়ার নেপথ্যে কী

ফের লাগামহীন হয়ে উঠছে ডিমের বাজার। গত এক মাসেরও কম সময়ে ডজনপ্রতি দাম বেড়েছে অন্তত ২৫-৩০ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে ডিমের দাম বেড়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য বলছে, দেশে দৈনিক সাড়ে ৪ কোটি থেকে ৫ কোটি পিস ডিম উৎপাদিত হয়। ডিমের চাহিদাও ৫ কোটি পিসের আশপাশে। কোনো কারণে হঠাৎ ডিমের চাহিদা বেড়ে গেলে বা সরবরাহ কমে গেলে দামেও তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে।

যার প্রমাণ আগেও মিলেছে বারংবার। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাজারে ডিমের অস্বাভাবিক দামের লাগাম টানতে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি বেঁধে দেয়া হয়েছিল প্রতি পিস ডিমের দাম। এতে নিয়ন্ত্রণে আসে বাজার। তবে গত বছরের মে মাসে এ বাজারে আবারও দেখা দেয় অস্থিরতা।

এরপর নানা নাটকীয়তায় রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ডিমের বাজারে লাগাম টানতে গত সেপ্টেম্বরে আরেফ দফা আমদানির অনুমতি এবং উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম বেঁধে দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সে সময় উৎপাদন পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের যৌক্তিক দাম ধরা হয় ১০ টাকা ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ এ দামে উৎপাদনকারীরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ডিম বিক্রি করবেন। একই সঙ্গে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের যৌক্তিক দাম ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরায় তা ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। সেই হিসাবে খুচরা পর্যায়ে এক ডজন ডিমের দাম হওয়ার কথা ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা।

কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়; আরও চড়া হয় ডিমের বাজার। ডজনপ্রতি দাম গিয়ে ঠেকে ১৮০ টাকায়। এরপর উৎপাদক ও ব্যবাসায়ীদের সঙ্গে নানা বৈঠক ও বাজারে অভিযান চালানোর পর নিয়ন্ত্রণে আসে ডিমের বাজার। তারপর থেকে কিছুটা ওঠানামার মধ্যে থাকলেও গত কয়েক মাসে অতোটা চড়া হয়নি বাজার। তবে চলতি আগস্টের শুরু থেকেই ফের বাড়তে শুরু করে ডিমের বাজার।

বর্তমানে ডজনে ২৫-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। অর্থাৎ সর্বোচ্চ দাম ধরে প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা; যা নির্ধারিত দামের চেয়ে ৬৩ পয়সা বেশি। তবে কোনো কোনো এলাকার দোকানগুলোতে ডজনপ্রতি ১৫৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।