রাসপূজায় দুবলারচরে যেতে বন বিভাগের ৫ রুট নির্ধারণ

সুন্দরবনের দুবলারচরে আগামী ৩ থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী রাসপূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান। এ উপলক্ষে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ নির্ধারণ করেছে পাঁচটি অনুমোদিত নৌরুট। এসময় শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই এ উৎসবে অংশ নিতে পারবেন।

বন বিভাগ জানিয়েছে, নির্ধারিত রুটগুলোতে বন বিভাগ, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ টহল দল নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে।

নির্ধারিত পাঁচটি রুট

  • বুড়িগোয়ালিনী-কোবাদক-বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল-হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চর
  • কয়রা-কাশিয়াবাদ-খাসিটানা-বজবজা-আড়ুয়া শিবসা-মরজাত হয়ে দুবলার চর
  • নলিয়ান স্টেশন-শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর
  • ঢাংমারী/চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ-পশুর নদী হয়ে দুবলার চর
  • বগী-বলেশ্বর-সুপতি-কচিখালী-শেলারচর হয়ে সুন্দরবনের বাহির দিয়ে দুবলার চর

বন বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, তীর্থযাত্রীদের ৩ নভেম্বর দিনের ভাটার সময় যাত্রা শুরু করতে হবে এবং শুধুমাত্র দিনের বেলাতেই নৌযান চলাচলের অনুমতি থাকবে। কোনো নৌযান নির্ধারিত চেকিং পয়েন্ট ব্যতীত অন্য কোথাও থামতে পারবে না।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট বা বয়া রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি লঞ্চ বা ট্রলারের গায়ে বি.এল.সি/সিরিয়াল নম্বর ও তীর্থযাত্রীর সংখ্যা স্পষ্টভাবে লিখে রাখতে হবে। সুন্দরবনে প্রবেশের সময় প্রত্যেক তীর্থযাত্রীকে টোকেন বা টিকিট প্রদান করা হবে, যা সবসময় সঙ্গে রাখতে হবে।

বন বিভাগ আরও জানিয়েছে, রাসপূজায় অংশগ্রহণকারীরা কোনো ধরনের বিস্ফোরকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র, শিকার সামগ্রী, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বা শব্দদূষণকারী যন্ত্র বহন করতে পারবে না। এসব সামগ্রী বহন করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অনুমতি পেতে তীর্থযাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ আবেদন করতে হবে। প্রতিটি নৌযানকে আলোরকোল কন্ট্রোলরুমে রিপোর্ট করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট পথের অনুমতিপত্রে সিলমোহরসহ রুট উল্লেখ থাকবে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ জানিয়েছে, তীর্থযাত্রীদের এই নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে রাসপূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান নির্বিঘ্ন ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন হয়।

সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এজেডএম হাসানুর রহমান বলেন, ‘রাসপূজা উপলক্ষে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া শেষ পর্যায়ে। এই সময়টাকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। বিভিন্ন ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন করা নিরাপত্তা কর্মী ও বন কর্মীদের এই তিনদিন বিভিন্ন রুটে দায়িত্ব দেয়া হবে। সব মিলিয়ে স্বাভাবিকভাবে এবার রাস উৎসব পালিত হবে বলে আশা করছি।’