গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের দক্ষিণে গাভদোস উপকূলে একটি মাছ ধরার নৌকা থেকে উদ্ধার হওয়া ৫৩৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মধ্যে ৪৩৭ জনই বাংলাদেশি। স্থানীয় কোস্টগার্ড (লিমেনার্কিও) কর্তৃপক্ষ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গ্রিসের উপকূলরক্ষী বাহিনীর মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সীমান্তবিষয়ক সংস্থা ‘ফ্রন্টেক্সের’ একটি নৌকা লিবিয়া সমুদ্রের ছোট দ্বীপ গ্যাভডোসের কাছাকাছি এলাকায় শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোরে টহল দিচ্ছিল। এ সময় সম্ভাব্য আশ্রয়প্রার্থীদের নৌকাটি ফ্রন্টেক্সের কর্মীদের নজরে আসে। এরপর তাদের উদ্ধার করা হয়। নৌকাটি কোথা থেকে যাত্রা শুরু করেছিল, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেখানে হেলেনিক কোস্টগার্ড সদস্যদের তত্ত্বাবধানে তাদের নিবন্ধন ও পরিচয় শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া চলছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে চারজন নারী ও দুটি শিশু রয়েছে; তবে তাদের অধিকাংশই পুরুষ। রেথিম্নোর কোস্টগার্ড প্রধান কিরিয়াকোস পাত্তাকোস জানান, নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানবপাচারকারী চক্রকে শনাক্ত করা এবং অভিবাসীদের দ্রুত অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া।
রেথিম্নো পৌরসভার উপমেয়র (নাগরিক সুরক্ষা) ইয়োরগোস স্কোরদিলিস বলেন, এত বিপুলসংখ্যক অভিবাসী সামলানোর মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামো রেথিম্নোর নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের ঘাটতির কারণে স্থানীয় প্রশাসন চাপে পড়ছে। তিনি জানান, আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আজ সোমবার ৩০০ জন অভিবাসীকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে এবং বাকিদের আগামী সপ্তাহে পাঠানো হবে।
উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের জাতীয়তা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৪৩৭ জন বাংলাদেশি ছাড়াও ৪৬ জন পাকিস্তানি, ৩৪ জন মিসরীয়, ১২ জন ইরিত্রীয় (যাদের মধ্যে ৪ নারী ও ২ শিশু), ৫ জন সোমালি এবং সুদান, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনের নাগরিক রয়েছেন। কর্তৃপক্ষের ধারণা, মানবপাচারকারীদের সহায়তায় লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল থেকে অন্তত ৩৬ ঘণ্টার ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রযাত্রা পাড়ি দিয়ে তারা গ্রিসে পৌঁছেছেন।
এ বিষয়ে গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা রহমান সুমনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো তথ্য এখনো তাদের জানানো হয়নি।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার আরেক ঘটনায় গ্যাভডোস উপকূলে বিপদে থাকা দুটি নৌকো থেকে ৬৫ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারীকে উদ্ধার করে ফ্রন্টেক্স।