রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে কনসার্ট হলে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩ জনে পৌঁছেছে। এ হামলার ঘটনায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করলেও রাশিয়া বলছে অন্য কথা, রাশিয়া দাবি করেছে, এই হামলার সঙ্গে ইউক্রেন জড়িত। তবে এ দাবি অস্বীকার করেছে ইউক্রেন।
শনিবার (২৩ মার্চ) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক ভাষণে বলেছেন, হামলাকারীরা ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। তারা ইউক্রেনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। প্রাথমিক তথ্যে জানা যাচ্ছে, হামলাকারীদের ইউক্রেনে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সীমান্তে প্রস্তুতি রাখা হয়েছিল। চার অস্ত্রধারীসহ হামলাকারীদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
তবে হামলার পরপরই দায় স্বীকার করে আইএস জানিয়েছিল, তাদের ‘যোদ্ধারা’ মস্কোর উপকণ্ঠে একটি বড় জমায়েতে হামলা চালিয়েছেন। এরপর নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরেছেন তারা।
শনিবার (২৩ মার্চ) এক বিবৃতিতে আইএস বলেছে, হামলায় তাদের চার যোদ্ধা অংশ নেন। আইএস ও ইসলামবিরোধী দেশগুলোর চলমান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে এই হামলা চালানো হয়েছে। তবে মস্কোর হামলায় তাদের কোন শাখা জড়িত ছিল, বিবৃতিতে তা জানানো হয়নি।
শুক্রবার (২২ মার্চ) রাত আটটার দিকে মস্কোর শহরতলির ক্রোকাস সিটি হলে ঢুকে সেখানে সমবেত লোকজনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে এক দল বন্দুকধারী। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে চার অস্ত্রধারী রয়েছেন। রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, চার অস্ত্রধারী রাশিয়ার নাগরিক নন। তারা সবাই বিদেশি।
অবশ্য ইউক্রেন দাবি করছে, এ হামলায় তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেছেন, ‘এই হামলায় ইউক্রেনের কিছুই করার নেই। রাশিয়ার সঙ্গে দেশ হিসেবে আমাদের সর্বাত্মক যুদ্ধ চলছে।’
ক্রেমলিন জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। হামলায় আহত শতাধিক ব্যক্তি এখনো হাসপাতালে ভর্তি। রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাতে গতকাল রাতে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো ক্রোকাস সিটি হলে আগুন নেভানোর খবর জানিয়েছে।
এ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, এ হামলার বিষয়ে আগেই রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাকে সতর্ক করেছিল। সতর্ক, বার্তায় বলা হয়েছিলো- মস্কোতে শিগগিরই হামলা হবে। তবে রাশিয়া তা আমলে নেয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, বিগত কয়েক বছরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ইসলামিক স্টেট। তারা বারবার পুতিনের সমালোচনা করেছে। এছাড়া মুসলিমদের বিরোধিতায় বিভিন্ন কার্যক্রমে রাশিয়ার অংশগ্রহণও ভালো চোখে দেখে না আইএস।
রাশিয়া ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শত্রু ইরান এবং তালেবান-শাসিত আফগানিস্তানে হামলা চালিয়েছে আইএসের এই শাখা। বিশ্লেষকদের মতে, আইএসআইএস-কে এর ক্ষমতা বেড়ে চলেছে। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপরেও তারা হামলা চালানোর মত শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা