বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শ্রদ্ধা জানাতে এসে এক বিরল ও সংক্ষিপ্ত বৈঠকে মিলিত হয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকার গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে এই দুই শীর্ষ নেতার সাক্ষাৎ ঘটে। ২০২৫ সালের মে মাসে দুই দেশের মধ্যে সংক্ষিপ্ত সামরিক সংঘাতের পর এটিই প্রথম উচ্চপর্যায়ের কোনো সরাসরি যোগাযোগ।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও টিভি এটিকে একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে, স্পিকার আয়াজ সাদিক তাঁর অফিশিয়াল টুইট বার্তায় এই বৈঠককে বড় ধরনের অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেগম জিয়ার বাসভবনে আয়াজ সাদিকের আসনের কাছে এগিয়ে গিয়ে এস জয়শঙ্কর তাঁর সঙ্গে করমর্দন করেন। সাদিকও হাসিমুখে সেই শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন। তাঁরা একে অপরের কুশলাদি বিনিময় করেন। যদিও একে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক বলা হচ্ছে না, তবুও দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর বর্তমান শীতল সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে এই ঘটনাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
২০২৫ সালের এপ্রিলে কাশ্মীরের পেহেলগামে এক হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত এবং কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে।
এর জেরে গত ৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে মিসাইল হামলা চালায়। পরবর্তী চার দিন দুই দেশ যুদ্ধবিমান, মিসাইল ও ড্রোন যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ১০ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আগ পর্যন্ত উভয় পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে কোনো উচ্চপর্যায়ের সংলাপ হয়নি।
বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিদায়বেলায় ঢাকার মাটিতে প্রতিবেশী দুই দেশের এই শীর্ষ কর্মকর্তাদের সৌজন্য বিনিময়কে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে।
মঙ্গলবার ৮০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন বেগম জিয়া। আজ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।