পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঘটে গেল নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর বক্তব্য চলাকালীন বিরোধী দল বিজেপির বিধায়করা হঠাৎ করেই লনে নেমে স্লোগান দিতে শুরু করলে, পুরো বিধানসভা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
ঘটনার একপর্যায়ে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পর আরও পাঁচ বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়। সাসপেন্ড হওয়া বিধায়করা হলেন শংকর ঘোষ, মিহির গোস্বামী, অশোক দিন্দা, অগ্নিমিত্রা পল এবং বঙ্কিম ঘোষ।
ঘটনার সূত্রপাত শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সেনাবাহিনী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। এর প্রতিবাদে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখনই তাকে বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়কেরা বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালীন বিক্ষোভ শুরু করেন।
এসময় তৃণমূল ও বিজেপির বিধায়কদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়। ‘চোর চোর’ স্লোগানের মধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের সদস্যরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তাকর্মীরা হস্তক্ষেপ করলে, কয়েকজন বিজেপি বিধায়ককে টেনে হিচড়ে এবং চ্যাংদোলা করে সভাকক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
ঘটনায় আহত হন বিজেপির চিফ হুইপ শংকর ঘোষ। মাথায় আঘাত লাগায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং মাথার স্ক্যান করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দলীয় সূত্র।
ঘটনার পর শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, মার্শাল ও নিরাপত্তাকর্মীরা মূলত তৃণমূলের ‘গুণ্ডা’। তারা আমাদের বিধায়কদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। এটা ছিল পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণ।
সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল বলেন, আমরা শুধু জানতে চেয়েছিলাম কেন বিরোধী দলনেতাকে বহিষ্কার করা হলো। সে কারণে আজ আমাদের মারধর করে বের করে দেওয়া হলো। গণতন্ত্র এখানে নেই।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে তৃণমূল সূত্র বলছে, বিধানসভার শৃঙ্খলা রক্ষায় যা করা হয়েছে, সেটাই যুক্তিসঙ্গত। ঘটনা নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।