যানজটমুক্ত শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের দোকানগুলো গাবতলীতে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। একই ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও। প্রাথমিকভাবে ঈদের পর ১৭৬টি পাইকারি দোকান গাবতলীতে সরিয়ে নেওয়া হবে। সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর গাবতলীতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন তাঁরা।
মতিঝিলের পর রাজধানীর অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা কারওয়ান বাজার। বড় পাইকারি বাজারের জন্যও বেশি পরিচিত। অথচ এ বাজারের সব ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। বাজারের কারণে দখল হয়েছে রাস্তা, যা যানজটেরও কারণ। এ পরিস্থিতিতে কারওয়ান বাজার সরিয়ে নেওয়ার বিকল্প দেখছে না সরকার। বহু দেন দরবারের পর সোমবার এ বাজার সরিয়ে গাবতলীতে নেওয়ার ঘোষণা দেন মেয়র।
মতবিনিময় সভায় মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জানান, ঈদের পর কাওরান বাজারে ডিএনসিসির পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে। যেকোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে বহু মানুষের জীবন হুমকিতে রয়েছে। কাওরান বাজারের পাইকারি কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীদের গাবতলীতে ডিএনসিসির পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুতই গাবতলীতে তাদের দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘বরাদ্দ দেওয়া হলে আপনারা যারা আসবেন না, তাদের দায় নিজেদের নিতে হবে। বরাদ্দ পাওয়ার পর কেউ না এলে সেটি নিয়ম অনুযায়ী অন্যজনকে বরাদ্দ দিয়ে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, স্মার্ট শহরের কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ এই পাইকারি কাঁচাবাজার থাকতে পারবে না।
প্রথম ধাপে কারওয়ান বাজার আড়ত মার্কেটের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার মোট ১৭৬টি দোকান গাবতলীতে স্থানান্তর করা হবে জানিয়ে মেয়র আরও বলেন, কাওরান বাজারে ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ১৮০টি টিনশেড দোকান আমিনবাজারের পাইকারি কাঁচাবাজারের আশপাশের উন্মুক্ত স্থানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং কাওরান বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা।
কারওয়ান বাজারের সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পর্যায়ক্রমে ভেঙে ফেলার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি। আসাদুজামান খান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত, আমরা এই পাইকারি মার্কেট কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে দেব। আমরা সেই জায়গায় আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনারা যেখানে যেতে চান, এখানে আসতে চাইলে আসেন।’
শহরের ভেতরে থাকা পাইকারী বাজার সরিয়ে নিতে ২০১৭ সালে তিনটি বাজার তৈরি করে দুই সিটি করপোরেশন। এতে খরচ হয়েছে অন্তত ৩৫০ কোটি টাকা। কিন্তু ব্যবসায়ীদের আপত্তির কারণে সরানো সম্ভব হয়নি। এখনও তাদের অজুহাত থামেনি।
