ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

শরীয়তপুরে ঐতিহ্যবাহী ‘চড়ক পূজা’ উদযাপন

আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম

খোলা মাঠের মধ্যে পোতা হয়েছে ১৫ ফুট উচ্চতার লম্বা একটি গাছ। আর গাছের মাথায় বসানো কাঠের কাঠামোর সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে লম্বা দুটি বাঁশ। সেই বাঁশের দুই প্রান্তে দড়ি বেঁধে চক্রাকারে ঘুরছে কিছু লোকজন। এটি চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। শরীয়তপুরে যুগ যুগ ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আবহমান বাংলার ঐতিহ্য হিসেবে এই উৎসবটি পালন করে আসছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার সনাতনধর্মের লোকজন চৈত্র সংক্রান্তির নীলপূজা উপলক্ষে মাসের শেষের ৩ দিন নীলসন্যাসী সেজে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘুরে বেড়ান। এ সময় তারা শিব-পার্বতী, দূর্গা, রাধাকৃষ্ণ, বলরামসহ বিভিন্ন দেবদেবী সেজে বাড়ির উঠোনো উঠোনে নিত্য প্রদর্শন করেন। বাড়ির গৃহবধূরা সংসারের শান্তি ও স্বামী-সন্তানের মঙ্গল কামনায় উপোস থেকে নীলষষ্ঠী পালন করেন। নীল সন্যাসীরা বাড়ির উঠোনে আসলে তাদের পূজা শেষে হাতে তুলে দেওয়া হয় ফলমূল ও চাল ডাল। পরে চৈত্র সংক্রান্তির দিনে সকালে মন্দিরে মন্দিরে শিব-পার্বতীর পূজা শেষে বিকেলে আয়োজন করা হয় চড়ক উৎসবের। এ সময় যুবকদের পাশাপাশি নানা বয়সী শিশু কিশোররা চড়ক উৎসবে মেতে উঠে।

চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে এই চড়ক পূজার আয়োজন করেছেন সদর উপজেলার চর সোনামুখী এলাকার মঙ্গল শিকারি। তিনি বলেন, এটি আমাদের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। আমরা চৈত্র মাসের শেষের দিনে এই পূজার আয়োজন করি। শিব-গৌরী পূজা শেষে খোলা মাঠের মধ্যে চড়কগাছ ঘুরানো হয়। সবাই খুব আনন্দ উৎসব করি।

কাঁলাচান মন্ডল নামের আরেক আয়োজক বলেন, আমরা প্রতি বছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি। আমাদের এলাকায় খুব জাকজমকপূর্ণভাবে চড়ক পূজা হয়ে থাকে। বিভিন্ন বয়সী লোকজন বিষয়টি উপভোগ করে থাকে।

চড়ক পূজা দেখতে আসা দর্শনার্থী সঞ্জয় মন্ডল বলেন, এই চৈত্র সংক্রান্তির চড়ক পূজা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। আমরা চড়কে উঠে খুব আনন্দ পাই। এটি আমাদের একটি বড় পূজা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শরীয়তপুর জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ ঘোষ বলেন, এই নীল ষষ্ঠী আমাদের পুরনো ঐতিহ্য। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন মন্দিরে চড়কগাছ ঘুরানো হয়। এই উৎসবে আমরা সবাই সামিল হই।

HK/FI
আরও পড়ুন