ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

কুকি-চিন কেড়ে নিল সেনা সদস্যের প্রাণ

আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৮ এএম

বান্দরবানের রুমায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) গুলিতে এক সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। নিহত সেনাসদস্য রফিকুল ইসলাম কর্পোরাল পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পশ্চিম সোশালিয়া গ্রামের আমজাদ আলী কায়তার বাড়ির মফিজ উদ্দীনের ছেলে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে রুমা উপজেলার বড়থলি পাড়া আর্মি ক্যাম্পের আওতাধীন পলি পাংশা পাড়ার মধ্যবর্তী স্থানের যাত্রীছাউনি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মরদেহ গ্রামের বাড়ি এসে পৌঁছায়। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। 

মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনার সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয় হৃদয়বিদারক দৃশ্যে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ স্বজনরা।

সন্ধ্যায় রফিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, কাপড়ে মুখ ঢেকে কাঁদছেন স্ত্রী আমেনা বেগম। পাশেই অপলক দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছে অবুঝ তিন শিশু। মা কেন কান্না করছে, তা এখনও বোঝার বয়স হয়নি তাফহীম, তাহমীদ ও ফারহানের। বাকরুদ্ধ হয়ে ঘরের মধ্যে বিছানায় শুয়ে কাঁদছেন তাদের দাদি হায়াতুন্নেছা। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা ছিল না তাদের।

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগ দেন রফিকুল ইসলাম। শুক্রবার বিকালে কেএনএফের সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন রফিকুল। তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার তার পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রাম সেনানিবাস থেকে মরদেহ গ্রহণ করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন।

নিহত সেনাসদস্য রফিকুল ইসলাম

নিহতের স্ত্রী আমেনা বেগম বলেন, ‘রোজার আগে সবশেষ বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। শুক্রবার সকালেও কথা হয়েছে। বলেছেন, ডিউটিতে আছেন। রাতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ফোন করে মৃত্যুর খবর জানানো হয়। পরে আমার শ্বশুর গিয়ে মরদেহ নিয়ে এসেছেন। আমার তিন ছেলে। বড় ছেলে প্রাইমারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সবাই অবুঝ শিশু। আমাদের পরিবারে উপার্জন করার মতো আর কেউ নেই। তিন ছেলেকে নিয়ে আমি এখন কীভাবে চলব? আমাদের দেখার আর কেউ রইলো না।’

চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, ‘চট্টগ্রাম সেনানিবাস থেকে শুক্রবার রাতে আমাকে ফোন করে তার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য নেওয়া হয়েছিল। পরে স্বজনদের কাছ থেকে মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত হয়েছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার পরিবারের পাশে থাকবে বলে আশা করছি।’

SN/AST
আরও পড়ুন