ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

কক্সবাজার সৈকতে আবর্জনা ও ভাঙন, বিড়ম্বনায় পর্যটকরা

আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভাঙ্গন, প্লাস্টিক বর্জ্য, ময়লা পানিসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন পর্যটকেরা। কর্তৃপক্ষ বলছে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন থাকলেও তা ব্যবহার করছে না কিছু পর্যটক ও ব্যবসায়ী। ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।

মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, সৈকতের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ময়লা, কাঁদা, প্লাস্টিকের বর্জ্য। জমে থাকা বৃষ্টির পানি থেকে বের হচ্ছে দুর্গন্ধ। পুরো সৈকত জুড়ে মশা আর মাছি। সন্ধ্যার পরে অবস্থা আর-ও কাহিল। মশার অত্যাচারে বসাও মুশকিল। এছাড়া সড়কে জমে থাকা বৃষ্টির পানির সাথে ময়লা-আবর্জনা গিয়ে পড়ছে সৈকতে। এতে বিপাকে পড়েছে সচেতন ও উচ্চাভিলাসী পর্যটকরা।

কলাতলী সৈকতের প্রবেশ পথে বৃষ্টির পানির স্রোতে কৃত্রিম ছড়া তৈরি হয়েছে। দু'পাশে বালু ভর্তি চটের বস্তা দিয়ে বাঁধও দেওয়া হয়েছে। সেই ছড়া দিয়ে সড়কে জমে থাকা ময়লা পড়ছে সাগরে। আর সেই পানিতে গোসল করছে পর্যটকেরা। এসব দেখে অনেকটা বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ অনেক পর্যটক। অধিকাংশ পর্যটক বলছেন, সৈকতের পরিবেশ রক্ষা করতে না পারলে পর্যটক কমবে কক্সবাজারে।

কলাতলী বীচে দেখা মেলে গাজিপুর থেকে আসা নাহিদ -জুলি দম্পতির। নাহিদ বলেন, ভালো লাগার কক্সবাজার দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অপরিস্কার সৈকত। সাগরে ময়লা পানি পড়ছে, পানিতে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ভাসছে। কিভাবে গোসল করবে। 

কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা নাফিস ইকবাল বলেন, কক্সবাজারে অনেক মজা করবো বলে বন্ধুরা মিলে এসেছি। কিন্তু পরিবেশের সাথে বাস্তবের মিল খুঁজে পাচ্ছি না। পানি অপরিষ্কার, সৈকতের পাশ দিশে হাঁটা যাচ্ছে না। একটা গন্ধ নাকে লাগছে। যার কারনে গোসল করা হয়নি। ইনানি, হিমছড়ির দিকে চলে যাবো। অবস্থা বুঝে গোসল করবো।

নারায়নগঞ্জ থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আবুল কালাম বলেন, আমি আমার স্ত্রী ও দুই বাচ্চা নিয়ে সৈকত এসে ছাতার নিচে বসলাম, কিন্তু পিছনেই কি পরিমাণ ময়লা তা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। এই যদি হয় সৈকতের পরিবেশ- তাহলে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে দুর্গন্ধের মধ্যে কীভাবে বসবো। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সৈকতের পরিবেশ রক্ষা করার জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ।

এদিকে ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে মোড়ে মোড়ে ডাস্টবিন বসানো হয়েছে। কিন্তু অনেকেরই হাতে থাকা পানির বোতল, চিপস, বিরিয়ানি-নাস্তার প্যাকেট, বাদামের প্যাকেট ইত্যাদি নির্দিষ্ট স্থানে না ফেলে যত্রতত্র ফেলতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে কথা হয় একাধিক ঝাল মুড়ি, আইসক্রিম, চানাচুর, চাটনি বিক্রেতাসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তাদের প্রত্যেকের দোকানের আশপাশে ময়লা, পলিথিন, আচারের প্যাকেটসহ নানা ময়লা থাকলেও তারা দাবি করেন, প্রত্যেক দোকানদার ডাস্টবিন ঝুড়ি ব্যবহার করছি। এখন পর্যটকরা তাতে ময়লা না ফেললে আমরা কি করতে পারি। আবার কেউ কেউ বলছেন এই ময়লা আমার দোকানের না। এরকম একাধিক  দায়সারা বক্তব্য দেন তারা।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম বলেন, ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট ডাস্টবিনের ব্যবস্থা আছে। বিচ কর্মীরা এ বিষয়ে কাজ করছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, কলাতলী, সুগন্ধা বা যেকোনো পয়েন্ট দিয়ে বৃষ্টির পানি সৈকতে পড়তে পারে। বেশি বৃষ্টি হলে পানি স্রোতের কারণে এমন হয়ে থাকে। কয়েকদিন আগেও ময়লা পানি সৈকতে পড়ছে এমন  অভিযোগ পেয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। পর্যটকের স্বার্থে জেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছেন।

MMS
আরও পড়ুন