ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

প্রবাসী বাবার সঙ্গে প্রথম দেখাই শেষ দেখা শিশু আয়ানের!

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৪ পিএম
প্রবাসী বাবার সাথে প্রথম দেখা এক বছর বয়সী শিশু আয়ানের। অথচ প্রথম দেখাতেই শেষ বিদায়। কারণ প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরেছে বাবার নিথর দেহ। হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের ধুলদী জয়পুর ঘষিরডাঙ্গি গ্রামে।
 
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় প্রবাসী সানিকে। শেষ হয় এক রেমিট্যান্স যোদ্ধার সংগ্রামী জীবনের অধ্যায়।
 
প্রবাসী সানি শেখ (২৮) সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের ধুলদী জয়পুর গ্রামের মজিদ শেখের ছেলে।
 
 
জানা গেছে, অনাগত সন্তানকে এক মাসের গর্ভে রেখে ২০২৪ সালের ২৪ জানুয়ারি সৌদি আরব পাড়ি জমান সানি শেখ। সেখানে দাম্মাম শহরে একটি প্রতিষ্ঠানে খাবার ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করতেন তিনি। গত ৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে খাবার ডেলিভারির উদ্দেশ্যে বের হন সানি। পথে দ্রুতগতির বেপরোয়া একটি প্রাইভেটকার চাপা দেয় তাকে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সানি।
 
গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার মরদেহ নিজ বাড়িতে এলে স্বজন ও প্রতিবেশীদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে আকাশ বাতাস। সানির সেই অনাগত সন্তান আয়নের বয়স এখন এক বছর। 
 
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে প্রথমবারের মতো দেখা হলো বাবা-ছেলের। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস; দুজনের কেউ কাউকে জড়িয়ে ধরতে পারেনি, পারেনি আদরের ছোঁয়া দিতে। পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কান্না আর আহাজারিতে আয়ানও শেষ বিদায় দিয়েছে বাবাকে। কে জানে, বাবাকে বলার জন্য কত শত কথা জমে আছে ছোট্ট আয়ানের মনে? কিন্তু সেই কথাগুলো আর কোনদিনও বলা হবে না তার। বাবা ডাকার আক্ষেপটাও থেকে যাবে তার সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে।
 
অন্যদিকে, বাবাকে হারিয়ে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে সানির ৪ বছর বয়সী মেয়ে সিনথিয়া। স্বামীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় স্ত্রী আছিয়া বেগম। বারবার মূর্চ্ছা যাচ্ছেন মা আনোয়ারা বেগম। আদরের একমাত্র ভাইকে হারিয়ে ২ বোনের আহাজারি কাঁদিয়েছে উপস্থিত সবাকেই। সানিকে শেষ বিদায় জানাতে এসে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন গ্রামের শতশত নারী-পুরুষ।
 
 
শহীদওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিউদ্দিন আহমেদ কাশেম বলেন, সানি খুব ভালো ছেলে ছিল। দুটি শিশু বাচ্চা রেখে প্রবাসের মাটিতে সে মারা গেল। এতে পরিবারটির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তার আকস্মিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
NJ
আরও পড়ুন