সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর। বিগত কয়েকদিন থেকে পাথর খেকো সিন্ডিকেটের লুটপাটের কবলে পড়েছে এই পর্যটন কেন্দ্র। ফলে অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়েছে সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র। সীমান্তবর্তী এই জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র থেকে সম্প্রতি শত শত নৌকায় করে প্রকাশ্যে পাথর উত্তোলন চলছে। এসব লুটপাট ঘটছে খোদ প্রশাসনের সামনেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই পাথর লুটপাট শুরু হয়। সন্ধ্যা নামার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শত শত বরকি নৌকা করে নদীর তলদেশ থেকে পাথর তুলে নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি দিনেও সেই লুটপাট অব্যাহত রেখে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পর্যটন কেন্দ্রের উপরিভাবে এখন পাথর না থাকায় মাটি খুঁড়ে পাথর বের করছেন এখানের শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে প্রশাসন মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও মূল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ের কারণে সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে পার পেয়ে যাচ্ছে। এসব সিন্ডিকেটের সাথে সরাসরি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ রয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইতোমধ্যেই প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মতো পাথর লুটপাট করেছে এই সিন্ডিকেট। তাছাড়া পূর্বে আগে নৌকাপ্রতি দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা চাঁদা তোলা হতো। প্রশাসনকে ম্যানেজ করা হতো আরও ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। পরে পাথর উত্তোলনকারীরা প্রতি নৌকা পাথর বিক্রি করতো ৫-৬ হাজার টাকায়। কিন্তু সম্প্রতি এই চিত্রও পাল্টেছে। এখন আর নৌকা প্রতি চাঁদা দিতে হয় না, স্থানীয় যে কেউ চাইলেই পাথর উত্তোলন করতে পারবে, তবে তা বিক্রি করতে হবে ‘সিন্ডিকেটের’ কাছে। এর বাইরে কেউ বিক্রি করতে পারবে না।

এদিকে কি পরিমাণ পাথর লুটপাট হয়েছে এ বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেনি উপজেলা ও জেলা প্রশাসন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী কিম বলেন, গত বছর এগুলোর থেকে কয়েকগুণ বেশি পাথর লুট হয়েছে গত ৫ আগস্টের পর থেকে। এখানে সবাই সংঘবদ্ধভাবে লুটপাট করছে। এসব প্রতিহত করতে প্রশাসনের ব্যর্থ। প্রশাসন কোনোভাবে কঠোর অবস্থান নিতে পারেনি, তাই এই অবস্থা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। আমরা যখন অভিযান করতে যাই, তখন সেখানে কাউকে পাওয়া যায় না। যখন চলে আসি, তখন আবার পাথর লুট করা শুরু করে দেয়।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানান, প্রশাসন থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
