রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে আলোচিত সগিরা মোর্শেদ সালাম হত্যা মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মোহাম্মদ আলী হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজা। রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন ও অপর আসামি মন্টু মোরলকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৩ মার্চ দিন ধার্য করা হয়। গত ২৫ জানুয়ারি এ মামলায় উভয় পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক শেষে ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ রাখা হয়েছিল। রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ওই দিন আদালত রায় ঘোষণা পিছিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি তারিখ দিয়েছিলেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আলী।
এ মামলার আসামি ছিলেন - সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, জা সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহিন, শ্যালক আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান, মারুফ রেজা ও মন্টু মণ্ডল ওরফে কুঞ্জ চন্দ্র মণ্ডল।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ সালাম ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাচ্ছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী রোডে পৌঁছানো মাত্র মোটরসাইকেলে আসা ছিনতাইকারীরা তার হাতের সোনার চুড়ি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তিনি দৌঁড় দিলে তাকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই সগিরা মোর্শেদ সালাম মারা যান।
ওই দিনই রমনা থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন সগিরা মোর্শেদ সালামের স্বামী সালাম চৌধুরী। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দুজনকে শনাক্ত করলেও অজ্ঞাত কারণে মিন্টু ওরফে মন্টু ওরফে মরণ নামে একজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।
এ ঘটনার ৩০ বছর পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চারজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এক হাজার ৩০৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৫৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এরপর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
