সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষের নানান মাত্রায় সংস্কারসহ আধুনিকায়ন করে উদ্বোধন করা করা হয়েছে। সোমবার (১০ জুন) বিকালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এটি উদ্বোধন করেন। এরপর এজলাস কক্ষে পুনরায় বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষ অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে উভয় বিভাগের বিচারপতির অংশগ্রহণে আনুষ্ঠানিক বেঞ্চ বসে।
অধিবেশনে বিশেষ বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের আদালত ব্যবস্থার বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরেন। নতুন এই এজলাস কক্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ও সমকালীন কাঠামোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির এই এজলাস কক্ষে আমাদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং এই ভবনের আদি শিল্পকর্ম জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
এই ভবনের পূর্ব দিকে অবস্থিত বাংলাদেশের মানচিত্র সংবলিত যে নান্দনিক নকশকর্ম সুদীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অনন্য স্মারক হিসেবে আমাদের জনস্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে, তার সাথে সাদৃশ্য রেখেই এই কক্ষের চার পাশের দেয়ালের নকশা করা হয়েছে। একই সাথে তথ্য প্রযুক্তির সাথে সবচাইতে আধুনিক অনুষঙ্গগুলো এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনা করতে এ আদালত এখন সম্পূর্ণ সক্ষম। প্রধান বিচারপতি বলেন, আজ বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত তথা প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষ সুসজ্জিত হয়ে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি এই আয়োজন নতুন দিনের সূচনা মাত্র। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অধস্তন আদালতের ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন নতুন করে প্রাণ পাবে।
এ সময় প্রধান বিচারপতির বিচার কক্ষে পাঁচজন সাবেক প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি, আইনজীবীসহ সুপ্রিম রেজিষ্ট্রির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচজন সাবেক বিচারপতি হলেন, বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেন, বিচারপতি মো.রুহুল আমিন, বিচারপতি মো.তাফাজ্জাল ইসলাম, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বক্তব্য দেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ রায়গুলো উল্লেখ করেন এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবীদের নাম উল্লেখ করে তাদের স্মরণ করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিচার বিভাগ যত শক্তিশালী হবে, মানুষের ন্যায় বিচার প্রাপ্তি ততটাই সহজ হবে। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে নীতিমালা করতে হবে। জনগণের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির জন্য মেধা, যোগ্যতা ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্নদের বিচারক নিয়োগ করতে হবে।
সুসজ্জিত বিচার কক্ষ উদ্বোধন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ক্যামেরাসহ গণমাধ্যম কর্মীরা প্রবেশ করার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে নিউজ ছাড়া স্থির চিত্র ও ভিডিও অন্য মাধ্যমে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।
