বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) আপিল বিভাগ এর রায় ঘোষণা করবেন।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ শুনানি শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন—জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন খোকন। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
এর আগে, গত ৯ জানুয়ারি এই মামলার এক আপিলকারী কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা না দেওয়ায় তার আইনজীবী সময় চাইলে আপিলের পরবর্তী শুনানির জন্য ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত।
আপিল শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, এই মামলার বিচারে সংবিধান ও আইন অনুসরণ করা হয়নি। মামলাটি আইনগত, মৌখিক, এমনকি শোনা সাক্ষ্য-প্রমাণহীন। অনুমাননির্ভর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
তার আগে, ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে দেওয়া সাজা স্থগিত করেন আদালত। আপিলের সারসংক্ষেপ দুই সপ্তাহের মধ্যে দাখিল করতেও নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের করা হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। গেল ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন।
