ঢাকা
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

প্রফেসর ড. মো. অলীউল আলমের দীর্ঘ ৩৩ বছরের বর্ণাঢ্য পথচলা

আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৯ পিএম

শিক্ষাক্ষেত্রে এক অনন্য মানবিক ও প্রশাসনিক প্রজ্ঞার প্রতীক প্রফেসর ড. মো. অলীউল আলম আজ আনুষ্ঠানিকভাবে পিআরএল-এ (পোস্ট রিটায়ারমেন্ট লিভ) পদার্পণ করেছেন। সুদীর্ঘ তেত্রিশ বছরের কর্মজীবনের মাধ্যমে তিনি সহকর্মী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক-সবার মনেই ‘ফার্স্টম্যান’ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) তার  জন্মদিনের দিনে এ বিদায় যেন এক আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি করে।

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. অলীউল আলম কর্মজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ কাটিয়েছেন রাজশাহীর এইচএসটিটিআই-এ। টানা দশ বছর তিনি অতিরিক্ত পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত পরিচালক) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রশাসনিক দক্ষতা, মানবিকতা ও সহজ-সরল চারিত্রিক গুণে তিনি পরিচিত ছিলেন সর্বত্র।

সহকর্মীদের মতে, পদ-পদবী তাকে কখনও অহংকারী করতে পারেনি। বরং তার হাসিমুখ, উন্মুক্ত অফিস দরজা, শ্রদ্ধাশীল আচরণ এবং বন্ধুবৎসল ব্যবহার তাকে করে তুলেছে একজন দুর্লভ মানবতাবাদী প্রশাসক। কর্তৃত্ব ও মমত্ববোধের সমন্বয় তিনি অনন্য দক্ষতায় বজায় রাখতেন।

রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে স্বল্প সময়ে তিনি গ্রহণ করেন বেশ কিছু সংস্কারমূলক উদ্যোগ, বিশেষত পরীক্ষা পদ্ধতির আধুনিকীকরণ, ফলাফল প্রকাশের নির্ভুলতা ও গতি বৃদ্ধি। বোর্ডের বিভিন্ন কাজ তিনি পরিচালনা করেছেন দক্ষ হাতে, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রদর্শন করেছেন সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দৃষ্টান্ত।

শিক্ষক হিসেবে ড. অলীউল আলম ছিলেন অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক। তার ক্লাস ছিল প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য নতুন চিন্তা ও জীবনের বাস্তব শিক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্র। তিনি শুধু প্রশিক্ষক নন, ছিলেন প্রকৃত মেন্টর। সময়নিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা ও সততার যে শিক্ষা তিনি দিয়েছেন, তা আজও তার শিষ্যদের পেশাগত জীবনে পাথেয় হয়ে আছে।

অনেকে মনে করেন, তার প্রজ্ঞা ও দক্ষতা আরও বড় দায়িত্বে ব্যবহৃত হলে দেশ উপকৃত হতো বেশি। তবে কর্মজীবনের আনুষ্ঠানিক অবসান হলেও তার মতো কর্মঠ মানুষের জীবনে প্রকৃত অবসর নেই। সমাজ, গবেষণা ও নতুন প্রজন্মের দিকনির্দেশনায় তিনি আরও অবদান রাখবেন বলে সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রত্যাশা।

শিক্ষাক্ষেত্রে তার অবদান, মানবিক গুণ এবং দায়িত্বশীলতার জন্য অসংখ্য গুণগ্রাহী আজ তাকে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন। তার বিদায় মুহূর্ত তাই শুধু আনুষ্ঠানিক নয়, বরং এক বড় শূন্যতার অনুভূতি ছড়িয়ে দিয়েছে সবার মনে।

LH/FJ
আরও পড়ুন