বাংলা নাটকের প্রগতিশীল ধারায়, সমাজ-রাজনীতির অন্তর্লীন দ্বন্দ্ব ও ইতিহাসের চিরন্তন পটপরিবর্তনের অন্বেষণে এবার মঞ্চায়িত হয়েছে ভৈরবী গীতরঙ্গ দলের নতুন নাট্যপ্রযোজনা ‘অগ্নিশ্রাবণ’।
শুক্রবার (২৭ জুন) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হয় এই মঞ্চনাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন। নাটকটির দ্বিতীয় মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয় শনিবার (২৮ জুন)।
‘অগ্নিশ্রাবণ’ এক ঐতিহাসিক উপাখ্যান- যেখানে ক্ষমতার পালাবদলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদলায় না। স্বৈরশাসক যায়, আরেক শাসক আসে- কিন্তু নিপীড়ন, ক্ষোভ, ও দীর্ঘশ্বাস থেকেই যায়। ইতিহাসের এই চক্রবদ্ধ অমানবিক পুনরাবৃত্তির বিপরীতে দাঁড়ানো এক সাহসী কণ্ঠস্বরই এই প্রযোজনার মূল সুর।
সময় থেমে থাকে না- সে এগিয়ে চলে নিয়তির অজানা রথে। ইতিহাসও রচনা করে একের পর এক নতুন অধ্যায়। বদলায় সময়, বদলায় শাসন, বদলায় শাসক, কিন্তু মানুষের লড়াই, তার বেঁচে থাকার যে আর্জি—সে থেমে থাকে না। অধিকার আদায়ের, লড়াই এর গল্পগুলোর বয়স বটবৃক্ষের সমান বৈ আর কিছু নয়। তেমনই এক ইতিহাসের গল্প নিয়ে নাট্যপ্রযোজনা- ‘অগ্নিশ্রাবণ’।
এটি এমন এক নাট্যভাষ্য যেখানে সময় হয়ে ওঠে চরিত্র, ইতিহাস হয়ে ওঠে সংলাপ। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন ইলিয়াস নবী ফয়সাল।
‘অগ্নিশ্রাবণ’-এর এই পরিবেশনা অংশগ্রহণ করছেন— অর্পিতা, অপরিজিতা, অতনু, আয়রা, বিপ্লব, ধ্রুব, দীপ্ত, ফাহমিদা, ইকরা, রাজিব, লাবন, নন্দিতা, পারমিতা, প্রীতম, নদী, লামিয়া, সিফাত, সোহা, অংকন, স্বপ্নীল, তোমো, প্রত্যাশা, রম্য, অর্থী, নোবেল, রিয়া, জিতু, আরিফ, আয়রিন, হিমেল, ইশান, আতিশা, জ্যোতি, নাজমুল, পিনাকী, ফাল্গুনী,পার্থ।
নাটকের নির্দেশক ইলিয়াস নবী ফয়সাল বলেন - ‘অগ্নিশ্রাবণ মানুষের মুক্তির গল্প। তেভাগা আন্দোলন, ’৪৭, ’৫২, ’৬৯, ’৭১,১৯৯০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ইতিহাসের নানা লড়াই উঠে এসেছে এই নাটকে। সময় এখানে নিজেই চরিত্র হয়ে কথা বলে। ক্ষমতার পালাবদলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য যে বদলায় না, সেই কথাই বলেছে ‘অগ্নিশ্রাবণ’। নাটক শুধু বিনোদন নয়, পরিবর্তনের হাতিয়ার- সেটাই আমাদের বিশ্বাস।’
নাটকটির সহকারী নির্দেশক ও আবহ সংগীতে ছিলেন দীপ্ত সেন; শব্দচয়ন ও শব্দবিন্যাসে ধ্রুব ব্যাপারী, জিন্নাতুল ইসলাম প্রত্যাশা; রিহার্সেল ম্যানেজমেন্টে অরিত্র বসাক; প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্টে ইশান, হিমেল; পোষাক ও মঞ্চসজ্জ্বায় অতনু ও আয়রা মৌ; মঞ্চ ও আলোকনির্দেশনায় ফজলে রাব্বি সুকর্ণ; কমিউনিকেশন কো-অর্ডিনেটর শামানজা ইসলাম লামিয়া ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে তাসমিমা সুলতানা রিয়া, মাহমুদা কণা।
এই আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আয়োজনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং পরিবেশনায় ভৈরবী গীতরঙ্গ দল। প্রদর্শনীতে প্রবেশ সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল।
