ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরা পাঁচদিনের ছুটি পেয়েছেন। পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ছেড়ে গ্রামে চলে গেছেন অধিকাংশ মানুষ। যার ফলে চিরচেনা ব্যস্ত ঢাকা ফাঁকা হয়ে পড়েছে। এদিকে ছুটি পাননি অনলাইন গণমাধ্যমে কাজ করা অনেক গণমাধ্যমকর্মী। ঈদের দিনও পূর্ণ ডিউটি করতে হচ্ছে তাদের।
পরিবার ছাড়াই ঈদ কাটে কর্মক্ষেত্রে তাদের। কোরবানির এক টুকরো মাংসও জুটেনি কারো কারো পাতে। সবাই ঈদে বাড়িতে চলে যাওয়ায় ফাঁকা মেসে থাকছেন অনেকেই। এতে তাদের খাবার-দাবারে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকেই ঈদের বোনাস তো দূরে থাক বেতনটা ঠিক পযর্ন্ত পাননি। তাদের শুধু দীর্ঘশ্বাস।
আব্দুল হামিদ নামে এক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, অফিস শেষ করে বাসায় যাচ্ছি। ঈদের দিনেও এক টুকরা মাংস খেতে পারলাম না। মেসের খালা না আসায় রান্নাও খুব সমস্যা হচ্ছে। আর আজকে তো রেস্টুরেন্ট সব বন্ধ তাই কি খাবো চিন্তায় পড়ে গেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, রাজধানীর অলিগলি, গ্যারেজ ও নির্দিষ্ট ফাঁকা জায়গায় পশু কোরবানি হচ্ছে। এসব দেখে খুব বাড়ির কথা মনে পড়ছে। মা কান্নাকাটি করছেন ছুটি পাইনি বলে বাড়ি যেতে পারিনি। আর ঈদে মাংস খাওয়াও হবে না।
নয়ন নামে আরেক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, কোরবানির ঈদ পুরাটাই কেটেছে অফিসে। অফিসে খাওয়ার কোনো আয়োজন ছিল না। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেছে তাও এক টুকরা মাংস খেতে পারলাম না।
অনলাইন গণমাধ্যমে কর্মরত নিহান বলেন, মানুষ গরু কাটাকাটি নিয়ে খুবই ব্যস্ত। আর আমরা অফিসের কাজে ব্যস্ত। বলতে বলতে অজান্তেই চোখের কোণে পানি জমে যায় তার।
আরেক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, আমার যদি সামর্থ্য থাকতো তাহলে একটা ছাগল কিনে কোরবানি দিতাম।
এ বছর কোরবানি দেওয়ার জন্য একজন ব্যক্তির কাছে সোনার ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ (৮৭ দশমিক ৪৫ গ্রাম) ভরি, রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে ৫২ (৬১২ দশমিক ১৫ গ্রাম) ভরি থাকতে হবে। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে হিসাব হলো: এর মূল্য সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হতে হবে। সোনা বা রুপা কিংবা টাকাপয়সা—এগুলোর কোনো একটি যদি আলাদাভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায়, তাহলেও তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) দর অনুযায়ী, সাড়ে ৫২ তোলা ২২ ক্যারেট রুপার দাম হলো ১ লাখ ১০ হাজার ১৮৭ টাকা। সাড়ে ৫২ তোলা ২১ ক্যারেট রুপার দাম ১ লাখ ৫ হাজার ২৯০ টাকা। আর ১৮ ক্যারেট রুপা সাড়ে ৫২ তোলার দাম পড়ে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। সনাতন পদ্ধতির রুপা সাড়ে ৫২ ভরির দাম ৬৭ হাজার ৩৩৭ টাকা।
আর এদিকে তাদের সামর্থ্য নেই বলে কোরবানি দিতে পারে না। আর মাংস খাওয়া হয়ে ওঠে না।
