গ্যাস-পানির বিল বকেয়া থাকলে বাতিল হবে মনোনয়ন

আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর গ্যাস ও পানির বিল বকেয়া থাকলে বাতিল হয়ে যাবে তার মনোনয়নপত্র। এক্ষেত্রে তিনি প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সম্প্রতি ইসির জারি করা এ সংক্রান্ত পরিপত্র থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

এতে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বা থাকার যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিষয়ে সংবিধানের ৬৬(১) (২) ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ১২(১) অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী আদালত দ্বারা ফেরারি বা পলাতক আসামি, প্রজাতন্ত্রের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কোনো লাভজনক পদে থাকেন, কোম্পানির পরিচালক বা ফার্মের অংশীদার হন [যাহা] কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত কোন ঋণ বা তার কোন কিস্তি মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনের পূর্বে পরিশোধে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে অযোগ্য হবেন। কিন্তু অনুচ্ছেদ ১২ এর দফা (১) এর উপ-দফা (ঠ) কৃষি কাজের জন্য গৃহীত ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ ব্যতীত, মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনের পূর্বে ব্যাংক হতে গৃহীত কোন ঋণ বা তার কোন কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে অযোগ্য হবেন। 

এতে আরও বলা হয়েছে, আরপিও অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনের পূর্বে প্রদেয় সরকারি টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা অন্য কোনো সেবা প্রদানকারী সংস্থার বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে অযোগ্য হবেন। এছাড়া প্রত্যেক মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থী কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি হলফনামা যাহার সহিত সর্বশেষ কর বছরের আয়কর রিটার্নের কপি সংযুক্ত করিয়া দাখিল করিতে হইবে।

লাভজনক পদের বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মেয়র ও চেয়ারম্যানদের প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, লাভজনক পদ অর্থাৎ প্রজাতন্ত্র বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ বা সরকারের শতকরা ৫০ ভাগের অধিক শেয়ার আছে এরূপ কোনো কোম্পানির কোনো অফিসে সার্বক্ষণিক কোনো পদ বা পদমর্যাদায় থাকা ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে অযোগ্য হবেন। এছাড়া উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়রের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/ আধা-স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত অফিস/প্রতিষ্ঠানের বা কর্পোরেশন অথবা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, কর্তৃপক্ষ এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনগুলোয় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য পদ্ধতিগতভাবে পদত্যাগ করতে হবে।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ১৩ক অনুচ্ছেদ অনুসারে কোনো ব্যক্তি একই সময়ে ৩ (তিন) টির অধিক নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থী হতে পারবেন না। যদি কোনো ব্যক্তি একই সময়ে ৩ (তিন) টির অধিক নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থী হন তা হলে সকল নির্বাচনি এলাকার জন্য তার সকল মনোনয়নপত্র বাতিল হবে।

এতে ইসি আরও জানায়, নির্বাচনি ব্যয় নির্বাহের জন্য আরপিও অনুযায়ী নির্বাচনি এজেন্টকে অথবা এজেন্ট নিয়োগ করা না হলে প্রার্থী কর্তৃক নিজে নির্বাচনি ব্যয় নির্বাহের জন্য (ব্যক্তিগত ব্যয় ব্যতীত) তফসিলি ব্যাংকে পৃথক একাউন্ট প্রয়োজন হবে। ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হতে ব্যক্তিগত ব্যয় ব্যতীত নির্বাচনসংক্রান্ত ব্যয়ের সমুদয় অর্থ পরিশোধ করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০২৫ এর বিধি ২৯ অনুসারে নির্বাচনি ব্যয় নির্বাহের জন্য তহবিলের সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী ফরম-২০ এ এবং প্রার্থীর সম্পদ, দায়-দেনা ও তার বাৎসরিক আয়-ব্যয় বিবরণী ফরম-২১ মনোনয়নপত্রের সাথে দাখিল করার বিধান রয়েছে।

ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের শেষ তারিখ ১১ জানুয়ারি আরও নিষ্পত্তি ১২ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, রিটার্নিং কর্মকর্তা দ্বারা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ করবেন ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনি প্রচার চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।

DR/SN