বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিন রোববার (৪ আগস্ট) সংঘাত, সংঘর্ষ ও নিহতরে খবর গুরুত্ব সহকরে প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুলো হলো- দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, আল–জাজিরা, হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি, রয়টার্স, এএফপি ও এপিসহ আরও কিছু নিউজপোর্টাল।
রোববার বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির ওয়েবসাইটের খবর দীর্ঘ সময় শীর্ষ স্থানে রাখা ছিল। ‘বাংলাদেশের সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ৮০ জন নিহত’ শিরোনামের ওই খবরে হয়, রোববার বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৩ পুলিশ সদস্য রয়েছেন। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা এখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে রোববার বাংলাদেশে অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পুলিশ ও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ঢাকা ছাড়াও বগুড়া, পাবনা, রংপুর, মাগুরা, কুমিল্লা, বরিশাল ও ফেনীতে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস– এ বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে রোববার শিরোনাম ছিল, ‘বিক্ষোভে কয়েক ডজন মৃত্যুর পর বাংলাদেশে আবার কারফিউ জারি’। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন মারা গেছে। আবার কারফিউ জারি করা হয়েছে। ইন্টারনেটে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির গতকালের প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চান বিক্ষোভকারীরা, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা।’ তাতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনকালে সবচেয়ে বড় অসন্তোষগুলোর মধ্যে একটি কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতি। ওই আন্দোলন থেকে এখন তার পদত্যাগের দাবি জানানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ নিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে চলমান আন্দোলন দমনে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ এনেছেন তাঁর সমালোচনাকারী ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তবে এ অভিযোগ শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রীরা অস্বীকার করেছেন।
ভারতের প্রায় সব গণমাধ্যমে বাংলাদেশের অসহযোগ আন্দোলনের খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে হিন্দুস্তান টাইমস–এর সংবাদ শিরোনাম ছিল ‘সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আবার শুরু হওয়া বিক্ষোভে ৭২ জন নিহত’। স্ক্রল ডটইনের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের রাস্তায় লাখো মানুষ, নিহত ৭২’।
আরেক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে সংঘাতে ৭২ জন নিহত, ভারতীয়দের সতর্ক থাকার আহ্বান’। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রোববার বিক্ষোভকারী ও শাসক দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে ৭২ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েক ডজন। এই পরিস্থিতিতে সিলেটে অবস্থিত ভারতের অ্যাসিস্ট্যান্ট হাইকমিশন বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় নাগরিকদের হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ও সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছে।
