শিক্ষার্থীদের অব্যাহত আন্দোলনে গত বছরের আগস্টে কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠা শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন উদযাপন করেছিল।
কিন্তু প্রায় নয় মাস পেরিয়ে গেলেও অন্তর্বর্তী সরকার ভোট প্রক্রিয়া বিলম্বিত করায় মানুষের মধ্যে হতাশা বেড়েছে। এখন দেশটির খ্যাতিমান নেতা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূস হুমকি দিচ্ছেন যে, যদি তাকে তার কাজ করতে দেওয়া না হয় এবং ধীরগতিতে দেশকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করার সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত এই ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের জন্য একটি নিরপেক্ষ এবং শক্তিশালী পথপ্রদর্শক বলে মনে করা হচ্ছিল , যিনি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি করবেন।
তবে তার সহযোগীরা বলছেন, দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে গঠিত একটি নতুন জোট তার নীতিগুলোর সমালোচনা করছে এবং বলছে, তিনি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে খুব ধীরে এগোচ্ছেন।
এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ড. ইউনূস হুমকি দিয়ে বলেছেন, রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন না পেলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
সরকারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ড. ইউনূস ইতোমধ্যে পদত্যাগপত্রের খসড়া লিখে ফেলেছিলেন। তবে অন্য উপদেষ্টারা তাকে বোঝান যে, তার পদত্যাগ বাংলাদেশকে আরো অস্থিতিশীল করবে।
সেই কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সেনাপ্রধান নির্বাচন নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছেন, তা ড. ইউনূসকে বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সমালোচনায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
ড. ইউনূস তার কাছের এক কর্মকর্তাকে বলেছেন, যারা দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করার কথা, তারাই এখন তাকে কোণঠাসা করে ফেলছে।
বুধবার সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ঘোষণা দেন যে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত- এই বিবৃতির পর ড. ইউনূস প্রায় ভেঙে পড়েন।
ড. ইউনূস এর আগে বলেছিলেন, ২০২৬ সালের জুন নাগাদ নির্বাচন হতে পারে, তবে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা দেননি। মন্ত্রিসভায় তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত নয়।
গত নভেম্বরে জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। এটি আর থামবে না। তবে পথে আমাদের অনেক কাজ সম্পন্ন করতে হবে।’