ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

সরকারি চাকরির নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকা রাখা বাধ্যতামূলক

আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০৮:২০ পিএম

সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও সহজ, স্বচ্ছ ও সময়সাশ্রয়ী করতে ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকা রাখা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। 

সোমবার (২৫ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে নির্দেশনা জারি করা হয়।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি পদের বিপরীতে দুইজন প্রার্থীকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হবে। মূল তালিকা থেকে কেউ যোগ না দিলে কিংবা চাকরি গ্রহণের পর কেউ পদত্যাগ করলে, অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ তালিকার মেয়াদ হবে এক বছর।

এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল ১৩-২০তম গ্রেডের নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকা সংরক্ষণের বিধান চালু হয়েছিল। নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে ১০-২০তম গ্রেডের সব পদেই এ তালিকা বাধ্যতামূলক হবে।

অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগের নিয়ম

পরিপত্রে বলা হয়েছে, বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রতিটি পদের জন্য দুজন প্রার্থীর নাম ও রোল সিলগালা খামে সংরক্ষণ করা হবে।

এই তালিকা থেকে নিয়োগের ক্ষেত্রে-

* প্রথমে মেধাক্রম অনুযায়ী তালিকার শীর্ষ প্রার্থীকে মোবাইল ফোন ও এসএমএসে জানানো হবে

* পরে রেজিস্ট্রি ডাকেও চিঠি পাঠানো হবে

* ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সাড়া না পেলে পরবর্তী প্রার্থীকে ডাকা হবে

অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে যারা নিয়োগ পাবেন, তাদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারিত হবে মূল তালিকা অনুযায়ী। একই দিনে একাধিক নিয়োগ হলে মেধাক্রম বা বয়স, কিংবা প্রয়োজন হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার বছর দেখে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে।

তবে পরিপত্রে বলা হয়েছে, বিজ্ঞাপিত পদের বাইরে অন্য কোনো পদে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

খরচ কমবে, পদ ফাঁকা থাকবে না

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এ ব্যবস্থার ফলে কোনো দপ্তরে দীর্ঘদিন পদ ফাঁকা থাকবে না, আবার প্রার্থীদের বারবার আবেদন করতে হবে না। এতে সরকার ও চাকরিপ্রার্থীদের সময় ও অর্থ-দুই-ই সাশ্রয় হবে।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, এটি একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। প্রার্থীরা বারবার একই দপ্তরে আবেদন করতে হবে না, আবার দ্রুত নিয়োগ দেওয়ার সুযোগও তৈরি হবে।

চাকরিতে বিপুল শূন্যপদ

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ (২০২৩ সালের) হিসাবে, সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত মোট পদ রয়েছে ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৫১৯টি। এর মধ্যে খালি রয়েছে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ১টি পদ।
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়:

১ম-৯ম গ্রেডে: ২ লাখ ৫৬ হাজার ৮২৬টি পদের মধ্যে ফাঁকা ৬৫ হাজার ৮৯৮টি (২৫.৬৬%)

১০-২০তম গ্রেডে: ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯৩টি পদের মধ্যে ফাঁকা ৪ লাখ ৭ হাজার ১০৩টি (৩২.৫০%)

সরকারি দপ্তরগুলোকে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ তাগাদা দিলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পদ ফাঁকা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অপেক্ষমাণ তালিকা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তকে শূন্যপদ পূরণের কার্যকর উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

NB/FJ
আরও পড়ুন