ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের সাবেক সেতুমন্ত্রী ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রায় ৯ মাস নীরব থাকার পর ভারতে বসে আবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। এবার তিনি ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আগামী নির্বাচনে দলের অবস্থান, ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে মুখ খুলেছেন।
শনিবার (৭ জুন) ঈদুল আজহার দিন আনন্দবাজারের সৌরভ পালকে অডিও সাক্ষাৎকার দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
প্রধান উপদেষ্টা আগামী এপ্রিলে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করেছেন। এই প্রসঙ্গটি সামনে এনে আনন্দবাজারের সাংবাদিক জানতে চান, আওয়ামী লীগ কি সেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে? উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ড. ইউনূস নির্বাচনের যে নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছেন সেটা দিয়ে তিনি নির্বাচন না করার বীজ অঙ্কুরিত করেছেন।’
কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান জনমতকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা। এখনো বাংলাদেশে ৪৫ পার্সেন্টের বেশি জনগণ আওয়ামী লীগের সমর্থক। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে নির্বাচনের বাইরে রাখা মানে নির্বাচনের নামে চরম একটা প্রহসন।’
এ সময় সাংবাদিক এক কথায় জানতে চান, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে লড়বে কি না। জবাবে কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর এমনকি নির্বাচন কমিশন থেকে রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ কীভাবে লড়বে। এখন তো আমাদের অস্তিত্বই হুমকির মুখে। অস্তিত্বকে আগে টিকিয়ে রাখতে হবে। সেটা সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে। আজ আমাদের অস্তিত্ব ও আদর্শ হুমকির মুখে। এই জায়গায় আমাদের ভিত শক্তিশালী করতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন। গণভিত মজবুত করা আমাদের এখন প্রধান এজেন্ডা। আমরা সেই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছি, করবো।’
জামায়াতে ইসলামী এপ্রিলে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছিল। সেই মত অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেছেন। এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজারের সাংবাদিক ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি, বাংলাদেশের জনগণের কাছে পরিষ্কার, ইউনূসের ক্ষমতার উৎস হচ্ছে মৌলবাদী, উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। এরাই হচ্ছে ইউনূসের ক্ষমতার উৎস। এরাই তাদের অ্যালাইন। এদের নিয়েই পথচলা ও ক্ষমতায় টিকে থাকার দৃঢ়তা দেখাচ্ছেন ইউনূস।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে বসে প্রায়ই ঘোষণা দিচ্ছেন তিনি দেশে ফিরবেন, আবার ক্ষমতায় বসবেন এবং চব্বিশের পতনের জন্য দায়ীদের শাস্তি দেবেন। সাংবাদিক জানতে চান, সেটা আমরা কবে দেখতে পাবো? জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কবে দেশে ফিরতে পারবো সেই কথা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। এটা সমসাময়িক পরিস্থিতি এবং এই অঞ্চলের যে স্ট্রাটেজি, পলিটিক্যাল সিচুয়েশন ও বাংলাদেশের জনগণের চিন্তাভাবনা- এসবের ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে।’
ঈদে নেত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছি কি না- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘বিকালে কথা বলব। তিনি (শেখ হাসিনা) ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। সারা বাংলাদেশে তিনি যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করছেন। প্রতিদিনই তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন।’
