‘আগামী নির্বাচনে জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে এমন এক সাহসী সরকার গঠন করা হবে, যে সরকার এক আল্লাহ ছাড়া কোনো পরাশক্তিকে ভয় করবে না এবং রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে সকল নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে’ বলে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর রামপুরাস্থ একরামুন্নেসা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রামপুরা থানা জামায়াত আয়োজিত জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন, সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করণ, ফ্যাসিস্ট সরকারের গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমানসহ ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ গণসমাবেশ-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
রামপুরা থানা উত্তরের আমির ফজলে আহমদ ফজলুর সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি ও ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনের আসন পরিচালক মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা এ টি এম মা’ছুম বলেন, ‘বিগত ১৮ বছর দেশে অপশাসন ও দুঃশাসন চলেছে। এর মধ্যে দুই বছর জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছিলো অদ্ভূত এক জরুরি সরকার। তাদের কাজই ছিলো আওয়ামী লীগকে পূনর্বাসন করা। আর প্রায় ১৬ বছর দেশে চলেছে আওয়ামী-বাকশালী জাহেলিয়াত। আইয়্যামে জাহেলিয়াতেও মানুষ খুন করে লাশের ওপর নৃত্য করা হয়নি। কিন্তু ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর রাজপথে এমন নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছিলো আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা। আওয়ামী লীগের পুরো শাসনামলে দেশে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছিলো। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ও আয়না প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে সৃষ্টি করা হয়েছিলো এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির। ধ্বংস করা হয়েছিলো দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে। ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষ বানিয়েছিলো। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি বরং ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমে তাদের লজ্জাজনক পতন হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের পতনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে আল্লাহ ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না। পবিত্র কালামে হাকীমের ভাষায়, আল্লাহর ধরা সবচেয়ে কঠিন ধরা। সে ধারাবাহিকায় গত বছরের ৫ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এতে দুই হাজার মানুষ শাহাদাত বরণ করেছেন। এদের মধ্যে ৬০ জন শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। আর এ ত্যাগের বিনিময়েই সম্প্রতি জুলাই সনদের স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। এখনো অনেক ধাপ বাকি। তাই জুলাই সনদকে সাংবিধানিক ভিত্তি দিতে অবিলম্বে সাংবিধানিক আদেশ জারি এবং আগামী নভেম্বরের মধ্যে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। আগে গণভোট ছাড়া জনগণ কোন ধরনের নির্বাচন মেনে নেবে না।’ তিনি গণদাবি আদায়ের লক্ষ্য সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তুরস্ক উপকূলে নৌকাডুবিতে ৭ অভিবাসীর মৃত্যু