বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে। মোনাজাত পরিচালনা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের আহমদ। ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার ভোর থেকেই ঢাকা, টঙ্গী, গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে মোনাজাতে শরিক হতে হাজার হাজার নারী-পুরুষ পায়ে হেঁটে ইজতেমার ময়দানের দিকে আসতে দেখা গেছে। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ ঢল অব্যাহত থাকবে। এর আগে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতেও মুসল্লিগণ বাস, ট্রাক, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, ট্রেন ও ট্রলারে করে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে আসেন।
ইজতেমা ময়দানের ৬ নাম্বার গেটে অবস্থানরত খোকন মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ৬টায় মোনাজাতে অংশগ্রহণের জন্য ইজতেমার মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত বাসে আসছি। তারপর পায়ে হেঁটে মিলগেট পর্যন্ত আসতে পেরেছি। ইচ্ছা আছে, যেখান থেকে মোনাজাত করা হবে সেখানে গিয়ে মোনাজাত ধরবো।
টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় সকাল সাড়ে ৭টায় কথা হয় মো. মোস্তফা মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছি মোনাজাত ধরার জন্য। ভোর ৫টায় বাসা থেকে রওনা দিয়ে এখানে এসে বসে আছি। মোনাজাত শেষ করে বাসায় ফিরে যাবো।

টঙ্গীর তুরাগ তীরের ক্যান্সার হাসপাতালের সামনে অবস্থানরত মুসল্লি মুসা বলেন, আশুলিয়া থেকে ভোরে চলে এসেছি ইজতেমা মাঠের কাছে। এখন মোনাজাতের জন্য অপেক্ষা করছি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার মাহাবুব আলম বলেন, শনিবার রাত ১২টা থেকে টঙ্গী-কামারপাড়া রোড, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস পর্যন্ত এবং আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ ও গাজীপুরগামী যানবাহনগুলোকে গাবতলী দিয়ে কোনাবাড়ী হয়ে এবং ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে ভোগড়া বাইপাস দিয়ে ৩০০ ফিট রাস্তা ব্যবহার করে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এ সময় এসব সড়ক হয়ে কোনো পণ্যবাহী গাড়ি বা যান চলতে দেওয়া হবে না।
শনিবার ১১টা পর্যন্ত টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায় ৭২টি দেশ থেকে প্রায় ৮ হাজার বিদেশি মেহমান অংশগ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।
হাবিবুল্লাহ রায়হান জানিয়েছেন, বিশ্ব ইজতেমায় এখন পর্যন্ত ১৩ জন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, রোববার দিবাগত রাতে ৪ মুসল্লির মৃত্যু হয়। রাজাবাড়ি জেলা পাংশা থানা বাসিন্দা মো. সারোয়ার, চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানার আব্দুল জলিল মেয়ের ছেলে মো. আলম, নরসিংদী জেলার নুরুল হক মিয়ার ছেলে শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার মৃত ওসমান গনীর ছেলে আল-মাহমুদা।
উল্লেখ, ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা। ওই পর্বে অংশ নেবেন মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা।
