ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

আশুরা নিয়ে প্রচলিত যত কুসংস্কার

আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৪, ১২:২৩ পিএম

মহররম মাস সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফে এসেছে- এই মাসটি অত্যন্ত ফযিলতপূর্ণ। কোরআনের ভাষায় ‘আরবাআতুন হুরুম’-অর্থাৎ চার সম্মানিত মাসের অন্যতম এই মাস। এ মাসে পৃথিবীর বহু ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আশুরার দিনে আল্লাহ তায়ালা তাঁর কুদরত প্রকাশ করেছেন।

বনি ইসরাইলের জন্য সমুদ্রে রাস্তা বের করে দিয়েছেন এবং তাদেরকে নিরাপদে পার করে দিয়েছেন। আর একই রাস্তা দিয়ে ফেরাউন ও তার অনুসারীদেরকে ডুবিয়ে মেরেছেন। (সহীহ বুখারী ১/৪৮১)

তবে এ দিনের গুরুত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে অনেকে নানা ভিত্তিহীন কথাও বলে থাকেন। যেমন, এদিন হযরত ইউসুফ আ. জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন। হযরত ইয়াকুব (আ.) চোখের জ্যোতি ফিরে পেয়েছেন। অনেকে বলে, এদিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে।

হযরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছেন। হযরত ইদরিস (আ.) কে আসমানে উঠিয়ে নেওয়া হয়। এসব কথার কোনো ভিত্তি নেই। (আস আসারুল মারফূআ, আবদুল হাই লাখনেবী ৬৪-১০০; মা ছাবাহা বিসসুন্নাহ ফী আয়্যামিস সানাহ ২৫৩-২৫৭)

এ মাসের একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা- হুসাইন (রা.) শাহাদাত। বলাবাহুল্য যে, উম্মতে মুহাম্মদির জন্য এই শোক সহজ নয়। কিন্তু নবী (সা.)-এরই তো শিক্ষা- ‘নিশ্চয়ই চোখ অশ্রুসজল হয়, হৃদয়ব্যথিত হয়, তবে আমরা মুখে এমন কিছু উচ্চারণ করি না যা আমাদের রবের কাছে অপছন্দনীয়।’

অন্য হাদীসে নবী কারীম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই যারা মুখ চাপড়ায়, কাপড় ছিঁড়ে এবং জাহেলী যুগের কথাবার্তা বলে।’

অতএব শাহাদাতে হুসাইন (রা.)-কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অনৈসলামিক কর্মকান্ডে লিপ্ত না হওয়া এবং সব ধরনের জাহেলী রুসম-রেওয়াজ থেকে দূরে থাকা প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্য কর্তব্য।

এ মাসে যেসব অনৈসলামিক কাজকর্ম ঘটতে দেখা যায় তার মধ্যে- তাজিয়া, শোকগাঁথা পাঠ, শোক পালন, মিছিল ও র‌্যালি বের করা, শোক প্রকাশার্থে শরীরকে রক্তাক্ত করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

এসব রুসম-রেওয়াজের কারণে এ মাসটিকেই অশুভ মাস মনে করার একটা প্রবণতা অনেক মুসলমানের মধ্যেও লক্ষ করা যায়। এজন্য অনেকে এ মাসে বিয়ে-শাদী থেকেও বিরত থাকে। নিশ্চয় এগুলো অনৈসলামিক ধারণা ও সামাজিক কুসংস্কার।

SM/FI
আরও পড়ুন