মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ দিন শুক্রবার বা জুমা। ইসলামী শরিয়তে এ দিনটি বিশেষ ফজিলত ও বরকতের দিন হিসেবে ঘোষিত। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেই এ দিনকে ‘সূর্য উদিত হওয়ার সর্বোত্তম দিন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হিজরি প্রথম সনে ইসলামের ইতিহাসে জুমার নামাজের সূচনা হয়েছিল। মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনার কুবা এলাকায় অবস্থানকালে প্রিয় নবী (সা.) জুমার দিন মদিনার পথে বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় পৌঁছলে জোহরের সময় হয়ে যায়। সেখানেই তিনি প্রথমবারের মতো জুমার নামাজ আদায় করেন। ইতিহাসে এটিই ইসলামের প্রথম জুমার জামায়াত হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।
বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ইবনে হিশাম ও বোখারির বর্ণনা অনুযায়ী, সে জামায়াতে উপস্থিত মুসল্লিদের সংখ্যা ছিল প্রায় একশ জন। তবে কিছু বর্ণনায় বলা হয়, মুসল্লি সংখ্যা ছিল চল্লিশ।
এর আগে নবুয়তের দ্বাদশ বর্ষে, জুমার নামাজ ফরজ হওয়ার পূর্বে মদিনার নাকিউল খাজিমা এলাকায় হজরত আসআদ বিন জুরারাহ (রা.)-এর ইমামতিতে একবার দুই রাকাআত জুমা আদায় করা হয়েছিল, যা ছিল নফল নামাজ হিসেবে বিবেচিত।
ইসলামী গ্রন্থে উল্লেখ আছে, আনসার সাহাবিরা নবুয়তের সময়কালেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে শুক্রবারকে সমবেত ইবাদতের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, ইহুদিদের জন্য শনিবার ও খ্রিষ্টানদের জন্য রোববার নির্দিষ্ট থাকলেও মুসলমানদের জন্য আলাদা কোনো দিন নেই। পরে তারা শুক্রবারকে ‘ইয়াওমুল আরুবা’ হিসেবে বেছে নিয়ে ‘জুমার দিন’ নামকরণ করেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে চলো এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম—যদি তোমরা বুঝতে পারো।’ (সুরা জুমআ :৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মতো গোসল করে এবং প্রথম প্রহরে মসজিদে যায়, সে যেন একটি উট কোরবানি করলো।’
ইসলামের ইতিহাসে প্রথম জুমার জামায়াত শুধু নামাজের সূচনা নয়, বরং মুসলিম ঐক্যের প্রতীক হিসেবেও স্মরণীয় হয়ে আছে।
প্রথমবারের মতো ভারত সফরে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী