ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় হুটহাট গতি কমে যাওয়া বা দ্রুত ডেটা ফুরিয়ে যাওয়া এখন অনেকেরই নিত্যনৈমিত্তিক সমস্যা। অনেকেই মনে করেন পাসওয়ার্ড সেট করাই যথেষ্ট, কিন্তু আপনার সামান্য অবহেলার সুযোগ নিয়ে প্রতিবেশী বা আশপাশের কেউ গোপনে ব্যবহার করতে পারে আপনার ওয়াই-ফাই। এতে যেমন ইন্টারনেটের গতি কমে, তেমনি ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা ও আইপি অ্যাড্রেসের অপব্যবহারের ঝুঁকিও তৈরি হয়।
আপনার নেটওয়ার্কে কারা সংযুক্ত আছে তা জানতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় প্রয়োজন। প্রথমে ব্রাউজারে গিয়ে 192.168.1.1 অথবা 192.168.0.1 টাইপ করে রাউটারের ড্যাশবোর্ডে লগইন করতে হবে। এরপর 'Connected Devices' বা 'Attached Devices' অপশনে গেলেই সংযুক্ত সব ডিভাইসের তালিকা দেখা যাবে। সেখানে অচেনা কোনো ডিভাইসের নাম বা ম্যাক (MAC) অ্যাড্রেস দেখলে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে নেটওয়ার্কটি চুরি হচ্ছে।
অধিকাংশ ব্যবহারকারী রাউটার সেটআপের পর ‘অ্যাডমিন’ পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করেন না। সাধারণত রাউটারের ডিফল্ট ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড 'admin' বা 'password' দেওয়া থাকে। হ্যাকাররা অনলাইনে সার্চ করেই সহজেই এই তথ্য জেনে নেটওয়ার্কের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। তাই ওয়াই-ফাই পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি রাউটারের অ্যাডমিন প্যানেলের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা সবচেয়ে জরুরি।

ওয়াই-ফাই নিরাপদ রাখার ৫টি কার্যকর কৌশল
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য কিছু সেটিংস পরিবর্তনের মাধ্যমে ওয়াই-ফাই সংযোগ শতভাগ নিরাপদ রাখা সম্ভব:
১. শক্তিশালী সিকিউরিটি মোড: পুরনো WEP বা WPA মোড অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এর পরিবর্তে WPA2-PSK (AES) বা আরও উন্নত WPA3 সিকিউরিটি মোড ব্যবহার করা উচিত। ২. WPS বন্ধ রাখা: ডিভাইসের সহজ সংযোগের জন্য ব্যবহৃত WPS (Wi-Fi Protected Setup) ফিচারটি হ্যাকারদের জন্য সহজ লক্ষ্য। নিরাপত্তার স্বার্থে এটি বন্ধ রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। ৩. SSID লুকিয়ে রাখা: রাউটারের নাম বা SSID ব্রডকাস্ট বন্ধ রাখলে সাধারণ কেউ আপনার নেটওয়ার্কটি খুঁজেই পাবে না। ফলে চুরির সম্ভাবনা কমে যায়। ৪. ম্যাক ফিল্টারিং: এই সুবিধা চালু করলে শুধুমাত্র আপনার অনুমোদিত ডিভাইসগুলোই ইন্টারনেটে সংযুক্ত হতে পারবে। পাসওয়ার্ড জানলেও অচেনা কেউ নেটওয়ার্কে ঢুকতে পারবে না। ৫. ফার্মওয়্যার আপডেট: রাউটারের নিরাপত্তা ত্রুটি দূর করতে নিয়মিত এর সফটওয়্যার বা ফার্মওয়্যার আপডেট রাখা প্রয়োজন।

পাসওয়ার্ড কেমন হওয়া উচিত
ওয়াই-ফাই পাসওয়ার্ডে নাম বা ফোন নম্বর ব্যবহার না করে অন্তত ১৬ অক্ষরের একটি শক্তিশালী কম্বিনেশন ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যেখানে বড় ও ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা এবং বিশেষ চিহ্ন (যেমন: @, #, $) থাকবে।
সতর্কতা ও নিয়মিত নজরদারি আপনার ব্যক্তিগত ইন্টারনেট সংযোগকে যেমন গতিশীল রাখবে, তেমনি সাইবার ঝুঁকি থেকেও সুরক্ষা দেবে।
‘গোল্ডেন প্লে বাটন’ পেলে ইউটিউবে আয় কত