দেশে চলমান ডলার সংকট, বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্যহীনতা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে ঘোষিত হতে যাচ্ছে নতুন মুদ্রানীতি।
চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) দ্বিতীয়ার্ধ আর নতুন বছরের (জানুয়ারি-জুন) ছয় মাসের মুদ্রানীতি ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ লক্ষ্যে রোববার (১৪ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে মুদ্রানীতির খসড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। পর্ষদের সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের পর নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে গত ছয় মাসে দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার ৯ থেকে বেড়ে চলতি জানুয়ারির এ সময়ে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার উঠেছে ১১.৮৯ শতাংশে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঋণের সুদহার বাড়ানো হয়েছিল। তবে সুদহার বৃদ্ধির প্রভাব মূল্যস্ফীতিতে সেভাবে দেখা যায়নি। অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যে সর্বশেষ গত নভেম্বরে দেশে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৯.৪৯ শতাংশ তুলে ধরা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে মূল্যস্ফীতির মধ্যেই চলতি বছরের প্রথমার্ধের (জানুয়ারি থেকে জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রেক্ষিতে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে মুদ্রানীতি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য ঘোষিত সংকুলানমুখী মুদ্রানীতির ধারাবাহিকতা দ্বিতীয়ার্ধেও রাখার সম্ভাবনা আছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সুদহার আরও বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে নীতি সুদহার, রেপো, রিভার্স রেপোর মতো মুদ্রানীতির মৌলিক সুদ কাঠামোগুলোও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
একইসাথে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) নির্দেশিত নীতি অনুসরণের ঘোষণাও আসতে পারে। আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১১ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, অর্থনীতির সামগ্রিক সূচকগুলো পর্যালোচনা করে আমরা মুদ্রানীতি প্রণয়ন করেছি। রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদের সভা আছে। ওই সভা থেকেও নীতিনির্ধারণী কোনো পরিবর্তন আসতে পারে।
তিনি আরও জানান, চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে নতুন মুদ্রানীতি প্রনয়ণ করা হচ্ছে।
