ঢাকা
সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

জুনে আসতে পারে আইএমএফের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি: অর্থ উপদেষ্টা

আইএমএফের কাছ থেকে এই ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পাওয়ার জন্য আর্থিক খাতে নানা ধরনের সংস্কারের শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে চতুর্থ কিস্তিতে অর্থ পেতে শর্ত ছিল চারটি।

আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৫ পিএম

দুটি শর্ত পূরণ না হওয়ায় চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ কিস্তির ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড় আরও পিছিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আগামী জুন মাসে এ ঋণ প্যাকেজের চতুর্থ কিস্তির সঙ্গে পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের একটি সেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘উভয়পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে’ আগামী জুন মাসে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে বাংলাদেশের ঋণের পরের দুই কিস্তি ছাড় করার সিদ্ধান্ত হতে পারে।

আমরা তাদের বলেছি, এত শর্ত একসঙ্গে মানা যাবে না। তারাও সাজেস্ট করেছে, আমরাও প্রস্তাব দিয়েছি জুন মাসে দুই কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করার।

আইএমএফের কাছ থেকে এই ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পাওয়ার জন্য আর্থিক খাতে নানা ধরনের সংস্কারের শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে চতুর্থ কিস্তিতে অর্থ পেতে শর্ত ছিল চারটি।

সেগুলো হলো- অর্থনীতির বহির্চাপ সামাল দিতে রাজস্ব আদায় জোরদার করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির ভঙ্গি আরও সঙ্কুচিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশ্নে সবুজ প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে নীতিমালার বাস্তবায়ন।

এর মধ্যে বিনিময় হার ও রাজস্ব আহরণ নিয়ে শর্ত পূরণের অগ্রগতি নিয়ে আইএমএফ সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

কথা ছিল, তৃতীয় পর্যালোচনা শেষ করে ৫ ফেব্রুয়ারি এর বোর্ড সভার পর ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চতুর্থ কিস্তির ৬৪ দশমিক ৫ কোটি ডলার ছাড় করবে আইএমএফ। তবে সেই সভা ১২ মার্চ পর্যন্ত পিছিয়ে গেছে। ফলে চতুর্থ কিস্তি অনুমোদনের বিষয়টিও বিলম্বিত হচ্ছে।

বাংলাদেশকে দেয়া ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে তৃতীয় কিস্তির অর্থের ব্যবহার ও শর্ত পরিপালনের অগ্রগতি দেখতে গত ৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা সফর করে আইএমএফ মিশন।

ওই সফর শেষে আইএমএফের প্রতিনিধি দল বলেছিল, বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানো, আর্থিক খাতের সংস্কার ও অর্থনৈতিক চাপ সামাল দিতে আগের ঋণের বাইরে নতুন করে ৭৫ কোটি ডলার দিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে তারা।

এ ঋণ আইএমএফের পর্ষদে অনুমোদন পেলে আগের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।

ডিসেম্বরে আইএমএফ মিশনের সফর শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজনৈতিক পালাবদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ধীর হয়ে পড়েছে এবং মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছেই।

অর্থপাচার বিশেষ করে ব্যাংক খাত থেকে অর্থ বের হওয়া চাপে পড়েছে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। পাশাপাশি রাজস্ব আয় কমার বিপরীতে সরকারি ব্যয়ের চাপ বেড়েছে। এগুলোর চাপ পড়েছে আর্থিক খাতে।

এমন প্রেক্ষাপটে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসার আভাস দেয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

AHA