ব্যাংক থেকে কোটি-কোটি ডলার লুট করার দায়ে ভিয়েতনামের ধনকুবের নারী ট্রুং মাই ল্যানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। ট্রুং মাই ল্যান নামের এই নারী ব্যবসায়ী ১১ বছর ধরে দেশটির বড় একটি ব্যাংক থেকে কোটি কোটি ডলার লুট করায় তাকে এ সাজা দেওয়া হয়।
রায় ঘোষণার আগে গত সপ্তাহে অধস্তন ব্যক্তিদের দোষারোপ করে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করার পর আদালতকে আত্মহত্যার ভাবনার কথা জানান তিনি।
আদালতে ট্রুং বলেন, আমি হতাশার মধ্যে পড়ে গেছি। এ কারণে আমি আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলাম। ব্যাংকিং সেক্টর সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুব কম। এর সঙ্গে জড়িত হওয়া আমার বোকামি ছিল।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) হো চি মিন সিটির ঔপনিবেশিক যুগের একটি আদালত ৬৭ বছর বয়সী এই নারীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা। আর এই বিচারকাজ ভিয়েতনামে অনুষ্ঠিত সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা।
ট্রুং মাই ল্যানের বিরুদ্ধে দেশটির সাইগন কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। আইনজীবীরা বলছেন, ঋণের ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার পুনরুদ্ধার হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই মামলায় ২ হাজার ৭০০ জনকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১০ জনসহ মোট ২০০ জন আইনজীবী ছিলেন।
মজার ব্যাপার হলো, মামলার প্রমাণ মোট ১০৪টি বক্সে সংরক্ষিত আছে, যার ওজন ৬ টন। মামলায় ট্রুং মাই ল্যানসহ মোট ৮৫ জনের বিচার চলছে। যাদের সবাই নিজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন।
তবে আদালতে আসামিদের সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অন্যদের শর্তসাপেক্ষে ৩ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ট্রুং মাই ল্যানের স্বামীর ৯ বছর ও তার ভাতিজির ১৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
ভিয়েতনামে দীর্ঘদিন কাজ করা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডেভিড ব্রাউন বলেছেন, আমার মনে হয়, কমিউনিস্ট শাসনামলে এ রকম বিচার আগে কখনো হয়নি। আগে এ ধরনের ঘটনাও (অপরাধ) ঘটেনি। সূত্র: বিবিসি ও আল জাজিরা।
