যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর প্রায় ৪৫ বছর ধরে আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই পদক্ষেপকে ‘সিরিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা’ বলে অভিহিত করেছেন। খবর সিএনএনের।
ট্রাম্প বলেন, সিরিয়ার বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারাকে তিনি একজন শক্তিশালী ও দূরদর্শী নেতা হিসেবে দেখেন। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর এই ঘোষণা আসে।
১৯৭৯ সালে সিরিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদে সহায়তাকারী রাষ্ট্র’ হিসেবে চিহ্নিত করে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ‘সিরিয়া অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্ট’ এবং ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধের সময় নিষেধাজ্ঞার মাত্রা আরও কঠোর হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞাগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল।
২০২০ সালে চালু হওয়া ‘সিজার আইন’ সিরিয়ার অর্থনীতিকে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দেয়। এই আইনের ফলে আন্তর্জাতিক সহায়তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায় এবং বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয়।
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘোষণা অনুযায়ী, প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাহী আদেশের আওতাধীন বেশিরভাগ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কংগ্রেসের অনুমোদিত আইন, বিশেষ করে সিজার আইন বহাল রয়েছে। এসব আইন বাতিল বা সংশোধন করতে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
২০২৪ সালের শেষদিকে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বারবার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত সিরিয়াকে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে। পাশাপাশি এটি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কূটনৈতিক বাস্তবতার সূচনা করতে পারে, যেখানে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনের সুযোগ পাবে।
তবে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সম্ভব নয়, যা আগামী দিনে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করছেন পর্যবেক্ষকরা।
