যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় মাত্র ১৩ বছর বয়সী এক ছাত্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিকে (ChatGPT) প্রশ্ন করে বসেছিল-‘আমার বন্ধুকে হত্যার উপায় বলো।’ আর সেই প্রশ্নই শেষ পর্যন্ত তাকে নিয়ে যায় পুলিশ হেফাজতে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ঘটনা ঘটে সাউথওয়েস্টার্ন মিডল স্কুলে। স্কুলের কম্পিউটার মনিটরিং সিস্টেম ‘গ্যাগল’ ওই ছাত্রের বার্তাটি শনাক্ত করে এবং সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সতর্ক করে। স্কুলের প্রকট নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসারে সতর্কবার্তাটি ক্যাম্পাস পুলিশ অফিসারের কাছে পাঠানো হলে পরে তাকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় ভোলুশিয়া কাউন্টি শেরিফ অফিস নিশ্চিত করেছে, কিশোরটিকে আটক করে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিশোরটি লিখিতভাবে দাবি করেছে যে সে ‘বন্ধুকে নিয়ে মজা করছিল’ তবে যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে সহিংসতার দীর্ঘ ইতিহাস বিবেচনায় কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে হালকাভাবে নেনি এবং তা জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে নেয়া হয়।
ঘটনার পর ভোলুশিয়া কাউন্টি ও স্কুল প্রশাসন অভিভাবকদের উদ্দেশে সতর্ক করেছেন। তারা জানিয়েছে, এই ধরনের ঘটনা ক্যাম্পাসে জরুরি অবস্থার সৃষ্টি করেছে এবং অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়েছে তাদের সন্তানদের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য, যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
এ ধরনের মনিটরিং সফটওয়্যার বিশেষ করে ‘গ্যাগল’ সম্প্রতি বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের স্কুল-অ্যাকাউন্ট ও ডিভাইসে লেখা প্রায় সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কথোপকথন স্ক্যান করলে সম্ভাব্য ঝুঁকি শনাক্ত করে সঙ্গে সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সতর্কবার্তা পাঠায়। তবে সমালোচকরা বলছেন, এসব সফটওয়্যার অনেক সময় ভুল সংকেত দেয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি-ভিত্তিক পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হচ্ছে। (অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্য অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার স্কুল এ ধরনের পর্যবেক্ষণ চালায়)।
মার্চ-এপ্রিল মাসে চ্যাটবট সংক্রান্ত একটি প্রাণবিদারক ঘটনার কথা আগেই সংবাদে উঠে এসেছিল, গত এপ্রিল ক্যালিফোর্নিয়ার এক ১৬ বছর বয়সি কিশোর আত্মহত্যা করার পর পরিবার ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে মামলা করে। তাদের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি ওই কিশোরকে একঘরে করে এবং আত্মহত্যার পরিকল্পনায় সহায়তা করেছিল, যথাযথ মানব সহায়তা বা বিপদের সতর্কতা না দেওয়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা ছিল নেতিবাচক। ওই মামলার পর চ্যাটবট এবং স্কুল পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি নিয়ে সমালোচনা ও আলোচনা আরও তীব্র হয়েছে।
এই ঘটনায় আবারও উঠে এসেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অনলাইন কনটেন্ট এবং স্কুল-নজরদারির সীমা ও দায়‑দায়িত্বকে কেন্দ্র করে বহু প্রশ্ন কিভাবে শিক্ষার্থীদের সাইবার নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে এবং একই সঙ্গে মিথ্যা বা ভুল সতর্কবার্তাকে কীভাবে কমানো যাবে। প্রশাসন ও শিক্ষা কর্তৃপক্ষ উভয়কেই এখন এই সংবেদনশীল ইস্যুগুলো নিয়ে তৎপর হতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
তুর্কি সিরিজে প্রভাবিত হয়ে মার্কিন নারীর ইসলাম গ্রহণ
রসায়নে নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা হবে আজ