১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বরণের পর ১৯৮৩ সালে রাজনীতির হাল ধরেন বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। ওই নির্বাচনে তিনি পাঁচটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবকটিতেই বিজয়ী হওয়ার এক অনন্য রেকর্ড গড়েন।
১৯৯১ সালের ২০ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বেগম খালেদা জিয়া। তার প্রথম মেয়াদের সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তন। ১৯৯১ সালের ৬ আগস্ট জাতীয় সংসদে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তার উদ্যোগেই দেশ রাষ্ট্রপতি-শাসিত ব্যবস্থা থেকে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় ফিরে আসে। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি সংসদীয় পদ্ধতির অধীনে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম মেয়াদে শিক্ষাক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী বিপ্লব সাধিত হয়। তার শাসনামলেই অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন করা হয়। বিশেষ করে নারী শিক্ষার প্রসারে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীদের বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ, উপবৃত্তি প্রবর্তন এবং ‘শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য’ কর্মসূচি ছিল বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত এক সাহসী পদক্ষেপ।
অবকাঠামো উন্নয়নেও তিনি রেখেছিলেন দূরদর্শী ভূমিকা। তার সরকারের আমলেই যমুনা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এছাড়া দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে একটি সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিয়েছিলেন তিনি। আঞ্চলিক কূটনীতিতে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাকে (সার্ক) শক্তিশালী ও গতিশীল করতে তার ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছিল।
রাজনীতিতে তার এই ‘প্রথম মেয়াদ’ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করা এবং গণতান্ত্রিক ধারাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
চীনের প্রধানমন্ত্রীর শোক ও সমবেদনা