ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবকালে ফের প্রমাণিত হলো সুন্দরবন আমাদের বারবার রক্ষা করে; তাই সুন্দরবন রক্ষায় সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। সুন্দরবন না থাকলে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো। প্রতিবারের ন্যায় সুন্দরবন এবারও বুক পেতে উপকূলের মানুষদের ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সুন্দরবনের উপর মানুষের অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৯টায় মোংলার কানাইনগর পশুর নদের পাড়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মোংলা শাখা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে সুন্দরবন বাঁচাও, উপকূল বাঁচাও, বাংলাদেশ বাঁচাও শীর্ষক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে এ পর্যন্ত ১২৭টি হরিণ ও ৪টি বন্যশুকরের মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। বাস্তবে সুন্দরবনে শত শত বন্যপ্রাণী মারা গেছে বলে ধারণা করি। সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্পের নামে দুর্নীতি হয়েছে, বাস্তবে বন্যপ্রাণী রক্ষায় পরিবেশবান্ধব টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। ৩৫ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকা সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। সুন্দরবন গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতান্ত্রিক সেবা প্রদান করে থাকে। স্থানীয় জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অথচ আমাদের নীতিনির্ধারকদের কাছে আজও সুন্দরবন গুরুত্বহীন।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার পরিবেশযোদ্ধা মো. নূর আলম শেখ বলেন, সুন্দরবন অন্যান্য বনের চেয়ে বেশি কার্বন ধরে রেখে পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে; সুন্দরবনকে রক্ষা করবে কে? সুন্দরবন রক্ষায় সরকারকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ৪০ ঘন্টা বেশি সময় ধরে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০/১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় রিমাল তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে লোকালয়সহ সুন্দরবনের মিষ্টি পানির আধার সব নোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। কাজেই মানুষসহ বন্যপ্রাণীর সুপেয় পানির সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। এছাড়া খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। ফসল উৎপাদনে কৃষক নানা সংকটে ভূগছে। এসব সংকট নিরসনে সরকারকে দুর্যোগ কবলিত মানুষের পাশে আন্তরিকভাবে থাকতে হবে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাপা নেতা নাজমুল হক, গীতিকার মোল্লা আল মামুন, মারুফ বিল্লাহ, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার শেখ রাসেল, জাহিদ ব্যাপারী, আলমগীর ব্যাপারী, শাহাদত শেখ, হেনা বেগম, সাহারুন বেগম প্রমুখ।
