‘আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে যৌথ বিবৃতি

আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫০ পিএম

গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর মতিঝিলে আদিবাসী ছাত্র-জনতার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি। হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন। এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন রাষ্ট্রের ২৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এই বিবৃতি দেন তারা।

বিবৃতিতে তারা জানান, রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় জাতীয় পাঠ্যক্রম ও টেক্সট বুক ভবনের সামনে আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর সংগঠিত পরিকল্পিত হামলার ঘটনায় আমরা সংক্ষুব্ধ। একই সাথে এ ধরনের ঘটনা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণের বিপরীতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সমাবেশের ওপর হামলা রাষ্ট্র  ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে বলে আমরা মনে করি।

বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা মনে করি, এ ধরনের অপরাধের ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা রাষ্ট্রীয় অসংবেদনশীলতা তথা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়নের ধারাবাহিকতার চিত্র স্পষ্ট  হয়ে ওঠে। একইভাবে পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি বাতিলের দাবি মেনে নেওয়া এবং এর প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলা করে আদিবাসী ছাত্র-জনতাকে রক্তাক্ত জখম করার ঘটনা বৈচিত্র্যময় জাতিগোষ্ঠীর বাংলাদেশের বিপরীতে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র কায়েমের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।

যৌথ বিবৃতি তারা আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ভিন্ন মত ও পথ এবং সাংস্কৃতিক চর্চার বিপরীতে উত্থিত ধর্মান্ধ উগ্রবাদি  মনস্তত্ত্ব গঠনের প্রবণতাকে রুখে দিয়ে দেশের সকল মত ও পথ, ধর্ম ও সংস্কৃতি চর্চার উপযোগী রাষ্ট্র বিনির্মাণে সংবেদনশীল রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তুলতে মনোনিবেশ করা জরুরি।

যৌথ বিবৃতি তারা আরও জানান, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গড়ে তোলার অনিবার্যতায় সরকার ও রাজনীতির দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে প্রত্যেক সচেতন নাগরিক ও গণমাধ্যম সবসময় সোচ্চার থাকবে এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণ বিভিন্ন সময়ের রক্তাক্ত ইতিহাসের ধারায় আজকে রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যে অঙ্গীকারবদ্ধ কর্মকাণ্ড বিদ্যমান রয়েছে তার বিপরীতে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার সমাবেশে হামলার ঘটনা আমাদের বিবেচনায় বৈপরীত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, মানবাধিকার কর্মী এবং সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন: 

১. অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা 

২. রাশেদা কে. চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা।

৩. রামেন্দু মজুমদার, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন।

৪. ডা. সারওয়ার আলী, ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

৫. অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সভাপতি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন।

৬. অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

৭. ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সভাপতি, মহিলা পরিষদ।

৮. ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সদস্য সচিব, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চ।

৯. এস.এম.এ সবুর, সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি।

১০. খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী।

১১. এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

১২. রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়   ১৩, অধ্যাপক ড.সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী,  শিক্ষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

১৪. সালেহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন।

১৫. ড. জোবায়দা নাসরিন, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

১৬. পারভেজ হাসেম, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।

১৭. কাজল দেবনাথ, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন।
 
১৮. আবদুল ওয়াহেদ, কার্যকরী সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক জোট।

১৯. আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব)।

২০. অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।

২১. এ কে আজাদ, সংস্কৃতি কর্মী।

২২. জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, সমাজ কর্মী।

২৩. অলক দাস গুপ্ত, সংস্কৃতি কর্মী।     
                               
২৪. জহিরুল ইসলাম জহির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, খেলাঘর।

২৫. দীপায়ন খীসা, সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম।  

২৬. রেজাউল কবির, সাধারণ সম্পাদক, খেলাঘর।

২৭. গৌতম শীল, সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল)।

SN