বরিশালে সবচেয়ে বেশি আমড়ার চাষ হয়। আর এর খ্যাতি দেশ জুড়ে। সুস্বাদু এ ফলটি সারাদেশের মানুষের চাহিদার ৮০ শতাংশ যোগান দিচ্ছে দক্ষিণের বিভাগ বরিশাল। সম্প্রতি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় ভবিষ্যতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বরিশালের আমড়ার পরিচিতি এবং চাহিদা আরও বাড়বে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে ১ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আমড়া চাষ হয়। যেখান থেকে ২৪ হাজার ৬৮৪ মেট্রিক টন আমড়া উৎপাদন হয়। যা হেক্টর প্রতি ১৩ দশমিক ৩০৭ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়। এর মধ্যে ফলনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি আমড়া উৎপাদন হয় পিরোজপুরে ৮ হাজার ৬৭৭ মেট্রিক টন, পর্যায়ক্রমে ঝালকাঠিতে ৪ হাজার ৫৭৮ মেট্রিক টন, পটুয়াখালীতে ৩ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন, বরিশালে ৩ হাজার ৩৮৪ মেট্রিক টন, ভোলায় ২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন ও বরগুনায় ১ হাজার ২৫৫ মেট্রিক টন।
চাষিরা জানান, আমড়ার মৌসুম শুরু হয় সাধারণত ভাদ্র মাস থেকে। শুরু হয়ে চলে দুই মাস। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে বরিশালের আমড়া পৌঁছে যাচ্ছে রাজধানীতে। এছাড়াও সিলেট, চট্টগ্রাম, যশোর, রাজশাহীসহ দেশের বড় বড় শহরে পাইকার ও বিক্রেতাদের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে বারিশালে উৎপাদিত আমড়া।
বানারীপাড়া উপজেলার আমড়া চাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, তার কয়েক একর জমিতে প্রায় ৩ হাজার আমড়া গাছ আছে। গত মৌসুমে ৪ হাজার মণ আমড়া ৬০ লাখ টাকার ওপরে বিক্রি করেছেন তিনি। আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে এবছরও তিনি ভালো ফলন পাবেন বলে জানান।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসাম্মৎ মরিয়ম বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মাটি ও পানি আমড়া চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। বিশেষ করে বরিশালের ঝালকাঠী, পিরোজপুর ও পটুয়াখালীতে সব চেয়ে বেশি ফলন হয়। এই অঞ্চলের চাষিরা সারা দেশের আমড়ার চাহিদার প্রায় ৮০ ভাগ পূরণ করে থাকে। আমড়া এখন চাষিদের জন্য একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
তিনি বলেন, জিআই স্বাকৃতি পাওয়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বরিশালের আমড়ার পরিচিতি ও চাহিদা বাড়বে। এই স্বীকৃতি দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
