রাঙামাটিতে চারদিন চেষ্টার পর অবশেষে মঙ্গলবার (২০ মে) সন্ধ্যায় সম্পূর্নরূপে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতা। গত চারদিন ধরে এই ভাস্কর্যটি ভাঙ্গার চেষ্টা করছিলো অপসারণকারী আন্দোলনকারীরা।
ভাস্কর্যের নীচের অংশে মার্বেল পাথরের ঢালাই ড্রিল মেশিন দিয়ে ভেঙে সরিয়ে লোহার রড কেটে কেটে লোহার দড়ি দিয়ে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে টেনে নীচে ফেলে দিতে সক্ষম হয়েছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতা। এসময় উৎসুক জনতা সেখানে ছুটে যায় একনজর দেখতে।
এরআগে, এই ভাস্কর্যটি রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছিলো। তাই তাদের মাধ্যমেই সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গত ১৪ মে এই ভাস্কর্যটি অপসারনের দাবিতে রাঙামাটি জেলা পরিষদ কার্যালয় ঘেরাও করে। চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের সাথে সাক্ষাত করে আন্দোলনকারীরা ৪৮ ঘণ্টার সময় বেধে দিয়েছিলো।
পরবর্তীতে আরো ১২ ঘণ্টার সময় দেওয়ার পরেও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল থেকে রাঙামাটি জেলা শহরের সার্ভার স্টেশন এলাকায় অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি ভাঙতে শুরু করেছিলো রাঙামাটির ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা।
এদিন বিকেল ৩টায় ভেদভেদী বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে সার্ভার স্টেশনের সামনে 'ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার' ব্যানারে অবস্থান নেয় একদল বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় পরে বিকেল ৫টার পর থেকে ভাস্কর্য ভাঙা শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, জেলা পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে যোগাযোগ করার পরেই নিজেরা-ই এই ভাস্কর্যটি অপসারনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের পর ২০১২ সালে রাঙামাটি জেলা শহরের ভেদভেদী সার্ভার এলাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেয় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। ২০১২ সাল থেকে প্রায় ২০২০ সাল পর্যন্ত ধাপে ধাপে ভাস্কর্যটির নির্মাণ করা হলেও এখনো কিছু কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। প্রথম পর্যায়ে ৪ কোটি পরবর্তীতে আরো ৭ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে এমন তথ্য জানা গেলেও বর্তমানে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
