ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

কাঁচা রাস্তাটি যেন কৃষকের ধানক্ষেত, দুর্ভোগে ৬ গ্রামের মানুষ

আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৫, ০১:৩২ পিএম

দেখে বোঝার উপায় নেই, এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন ৬ গ্রামের মানুষ। মনে হবে, ধান চাষাবাদের জন্য কোনো কৃষক তার জমি হালচাষ করে রেখেছেন।

তবে এটা হালচাষের কোনো জমি নয়। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের টিটা গ্রামের একটি রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে টিটা পানাইল, ইকড়াইল, শিকারপুর, মালা ও বড়ভাগসহ অনেক গ্রামের কৃষক তাদের ফসল আনা-নেওয়া করেন। রাস্তার এ সমস্যাও দীর্ঘদিনের। 

বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা রাস্তায় কিছু অংশ ইটের সলিং করে দেন। তবে অবশিষ্ট ৫০০ মিটার রাস্তা নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও কয়েক বছরে তা পাকা হয়নি। এ জন্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজারো মানুষ। রাস্তাটি দ্রুত পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

প্রায় ১৩ বছর আগের ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে রাস্তাটি হলেও এখনো পাকাকরণ হয়নি। বৃষ্টির মৌসুমে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। টিটা চরাঞ্চলের একমাত্র যাতায়াতের সড়ক এটি। এই সড়ক দিয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ।

এছাড়া আশপাশের অনন্ত ৬ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক এই সড়ক দিয়ে তাদের ফসল আনা-নেওয়া করেন। এখন চলছে পাট কাটার মৌসুম। সড়ক বেহাল হওয়ায় অনেক কৃষক ক্ষেত থেকে পাট কাটতে পারছেন না। সামান্য বৃষ্টি হলে কাদা-পানিতে রাস্তা একাকার হয়ে যায়। পানিবন্ধতায় কোথাও কোথাও রাস্তা তলিয়ে কাদায় ভাগাড়ে পরিণত হয়। 

টিটা গ্রামের গৃহিণী সেলিনা বেগম জানান, কয়েক দিন রান্না করার গ্যাস ফুরিয়ে গেছে, চালও শেষের দিকে। এ রাস্তা দিয়ে কোনো ভ্যান চলাচল করতে পারে না। এমনকি পায়ে হেঁটে মানুষ যাতায়াত করতে পারে না। এ জন্য গ্যাসের সিলিন্ডার ক্রয় করতে পারছি না। নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে। 

স্থানীয় টিটা শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ হাই স্কুলের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাব্বানী মিয়া জানান, এ বছর বৃষ্টিতে কাঁচা সড়কটিতে ছোট-বড় গর্ত আর খানাখন্দ হওয়ার পর স্কুলে যেতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছি। এরপর আর এ সড়ক দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না। এদিকে আমার প্রাইভেট পড়া বন্ধ রয়েছে।

রাব্বানীর মতো এমন অনেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় করে। টিটা গ্রামের কৃষক নাছির মিয়ার প্রায় ৩ একর জমিতে রয়েছে পাট। তার ভাষ্য, পাট কাটার উপযোগী হয়ে পড়েছে। তবে রাস্তার সমস্যার জন্য পাট কাটতে ভয় পাচ্ছি। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সাইদে পটু মিয়া বলেন, টিটা ভাসমান সেতুপাড় থেকে টিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কটি ইট বিছিয়ে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। অবশিষ্ট যে অংশ এখনো কাঁচা রয়েছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তারা ইট বিছিয়ে রাস্তা করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। টগরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিয়া আসাদুজ্জামানও একই কথা বলেন। 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগত হোসেন সৈকত বলেন, বৃষ্টির মৌসুমে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মৌসুম শেষ হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখে রাস্তাটি সংস্কার করে পাকাকরণের ব্যবস্থা করা হবে। 

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল জানিয়েছেন, সরেজমিনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে। 

NJ
আরও পড়ুন