পাকিস্তানে গত জুন মাস থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় নিহত বেড়ে ৬৯৯ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে আরও ২৬ জন নিহত হওয়ার পর মৃতের সংখ্য ৬৯৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্যের ভিত্তেতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু নিউজ।
সর্বশেষ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে খাইবার পাখতুনখাওয়াতেই। সেখানে বন্যায় ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত ২৬ জুন পাকিস্তানে প্রথম বর্ষার তাণ্ডব শুরু হয়। গত কয়েকদিনে এ পরিস্থিতি অনেক বেশি খারাপ হয়ে যায়।
আনাদোলু জানিয়েছে, সোমবার (১৮ আগস্ট) সোয়াবি, নোশেরা, মার্দান, পেশোয়ার অন্যান্য বিভাগে বৃষ্টিতে ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
এরমধ্যে বুনের বিভাগ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে অন্তত ২২২ জনের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বুনেরে আরও অনেক মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বুনেরের বেশোনই গ্রাম রাতে আকস্মিক বন্যার পানিতে পুরো নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সেখানে উদ্ধারকারীরা এখনো জীবিত মানুষের খোঁজ চালাচ্ছেন। শত শত মানুষের প্রাণহানির পাশপাশি ধ্বংস হয়ে গেছে বহু অবকাঠামো। বন্যা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সাধারণ মানুষের ঘর-বাড়ি, গবাদিপশু সহ সবকিছু।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে খাইবার পাখতুনখাওয়ার বিভিন্ন জায়গায় অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত শুরু হয়। যা শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এরপর ঘটে মেঘ বিস্ফোরণের ঘটনা। যেটির প্রভাবে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা নিশ্চিহ্ন করে দেয় অনেক কিছু। সোমবার থেকে নতুন করে আবারও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়।
খাইবার পাখতুনখাওয়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৭৮০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারমধ্যে ৩৪৯টি বাড়ি পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। সাধারণ মানুষকে পূর্বসতর্কতামূলক প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
দেশটির তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তাতার জানিয়েছেন, আক্রান্ত অঞ্চল থেকে ২৫ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে প্রায় এক হাজার মানুষকে।
পাকিস্তান জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) চেয়ারম্যান হাইদার জানিয়েছেন, আগস্টের শেষ পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টির ঝুঁকি অব্যাহত থাকবে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত আরও অন্তত দু-তিন দফা ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।
এনডিএমএ চেয়ারম্যান জানান, সেনাবাহিনীর বিশেষ ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে এবং গুরুতর আহতদের হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অ্যাভিয়েশন ঘাঁটিগুলোও জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্ধার অভিযানের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চলছে। তাদের খুঁজে না পাওয়া গেলে মৃতের সরকারি সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
সূত্র: আনাদোলু নিউজ
পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় নিহত বেড়ে ৬৫৭
এক বছরে নিহত ৩৮৩ ত্রাণকর্মী: জাতিসংঘ