গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে টানা আন্দোলনের কারণে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। কলেজের শিক্ষার্থীরা গত ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন। টানা ৮ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা ও অফিস কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা জয়দেবপুর-শিববাড়ি আঞ্চলিক সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। এতে ওই সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পরে বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩ জন নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর মো. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. তাজুল ইসলাম ও মোখলেছুর রহমানকে অবিলম্বে কলেজ থেকে বদলি করতে হবে। একইসাথে তারা কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষাবান্ধব ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
এর আগে বুধবার (২০ আগস্ট) শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রাঙ্গণে প্রতীকী কর্মসূচি হিসেবে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। তারা প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন এবং ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ লেখা ব্যানার টানান।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ে দাবির বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবং অধ্যক্ষ কর্তৃক প্রহসনমূলক ক্লাস রুটিন প্রকাশের কারণে তারা সম্পূর্ণ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান চয়ন বলেন, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আমরা চাই, যেসব শিক্ষক আমাদের প্রতি অশোভন আচরণ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অন্য শিক্ষার্থীরাও অভিযোগ করেন, কলেজের কিছু শিক্ষক ও ইনস্ট্রাক্টরের কারণে তারা মানসিক চাপের মধ্যে পড়েছেন। নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় অনেকেই ক্যাম্পাসে অস্বস্তি বোধ করছেন।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ উম্মে সালমা খানম বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমাধান আসবে এবং ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে চালু হবে।
আন্দোলনের কারণে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। নির্ধারিত সময়ের পরীক্ষা স্থগিত থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, দাবিগুলো মেনে নেওয়া না হলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন।
কুয়াকাটায় বাড়ছে ডলফিনের মৃত্যু হার