রপ্তানি হচ্ছে গাইবান্ধার মিষ্টি আলু

এক সময় যে মিষ্টি আলু ছিল নিম্ন আয়ের মানুষের ক্ষুধা নিবারণের অন্যতম উৎস, গাইবান্ধার উৎপাদিত সেই মিষ্টি আলু এখন জাপানসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখছেন সেখানকার কৃষকেরা।

বাজারে চাহিদা না থাকায় আগে বাড়ির উঠানে কিংবা সামান্য জায়গায় পরিবারের চাহিদা মেটাতে মিষ্টি আলু চাষ হতো। কিন্তু এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে উন্নত জাতের মিষ্টি আলু। কৃষকেরা এসব আলু তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জানা যায়, সাঘাটা উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া মিষ্টি আলু চাষের উপযোগী হওয়ায়, তিন বছর আগে সাঘাটা উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে ও নারুতো জাপান কোম্পানির সহযোগিতায় করতোয়া ও যমুনা নদীর বিভিন্ন চরের পরিত্যক্ত জমিতে মিষ্টি আলু চাষ শুরু হয়। অন্য আলুর চেয়ে উৎপাদন বেশী হওয়ায় ও কম খরচে অধিক লাভ পাওয়ায় এ আলু চাষে ঝুঁকছেন এই এলাকার চাষীরা।

মিষ্টি আলু চাষীরা জানান, পাট ছাড়া যেসব জমিতে কিছুই হতো না সেসব জমিতে স্বল্প ব্যয়ে বছরে দু-বার এ আলু চাষে ভাগ্য ফিরেছে তাদের। এই এলাকার মিষ্টি আলু রপ্তানিযোগ্য হওয়ায় বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানী তাদের চাষাবাদসহ আগাম সকল খরচ দেয়ায় মুলধন ছাড়াই লাভের মুখ দেখছেন তারা। তাদের এসব উৎপাদিত আলু যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। 

নারুতো জাপান কোম্পানীর মাঠকর্মী মো: কাজী জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদেশে এ এলাকার সুস্বাদু মিষ্টি আলুর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকের বিভিন্নভাবে চাষাবাদে সহযোগিতা করে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এসব আলু জমি থেকে সংগ্রহ করে থাইল্যান্ড, জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি যাচ্ছে জাপানে।

সাঘাটা উপজেলা কৃষি অফিসার মো: সাদেকুজ্জামান খবর সংযোগ ডটকমকে জানান, এক সময় মিষ্টি আলু অবহেলিত ফসল হলেও এখন এই এলাকা কৃষি বিপ্লবের অংশীদার হয়ে উঠেছে মিষ্টি আলু চাষ। পতিত জমি ব্যবহারে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

চলতি বছর জাপানি উন্নত জাতের ২৫ হেক্টর কোকিও-১৪ জাতের সহ ১শ ৮০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। বিঘা প্রতি উৎপাদন হচ্ছে ৯৯ মণ থেকে ১শ মণ মিষ্টি আলু।