গাইবান্ধায় দেখা দিয়েছে ডাইরিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ। গত সপ্তাহে শুধু জেলা হাসপাতলে ৫০০ এর বেশি শি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ভর্তি রোগীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
জানা যায়, রাতে শীত আর দিনে স্বাভাবিক তাপমাত্রা। এমন আবহাওয়ায় গাইবান্ধায় শিশুদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ডাইরিয়াসহ বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি। জেলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর জন্য বরাদ্দ বেডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় শিশুদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে মেঝে, সিঁড়ির উপরে ও নিচে অবস্থান নিয়ে। শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও আক্রান্ত হচ্ছেন ডাইরিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে।
আক্রান্ত শিশুদের বেশির ভাগেরই প্রথমে পেট ব্যথা-বমি ও পরে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে গড়ে শুধু জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৫০০’র অধিক ডাইরিয়া ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশু রোগী। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর চিত্রও একই।
ডাইরিয়ার পাশাপাশি হঠাৎ জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, বমি, পাতলা পায়খানাসহ শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত বিভিন্ন রোগে।
স্থানীয়ভাবে চিকিৎসায় ভালো না হওয়ায় ভর্তি করছেন হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর আবার অনেক শিশু পুনরায় আক্রান্ত হচ্ছে। হঠাৎ শীতজনিত কারণে রোগী বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
শিশু রোগীর আভিভাবক মোর্শেদা বেগম জানান, ঠান্ডার কারণে রাতে হঠাৎ তার ৪ বছরের শিশু সন্তানের পেট ব্যাথা ও বমি শুরু হয়। পরে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে কোনো উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
বাদিয়াখালি গ্রামের শাহিন মিয়া জানান, হঠাৎ তার ছেলে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হন। এখন শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। শীতের কারণে এ রকম অনেক শিশু আক্রান্ত হচ্ছে।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র নার্স রাজিয়া সুলতানা জানান, ২০ জন রোগীর ডাইরিয়া ও ২০ জন শিশু রোগীর ওয়ার্ড হলেও প্রতিদিন ৩ গুণ রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এছাড়াও চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে অনেক রোগী। বাড়তি রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের শিশু, কিশোর ও নবজাতক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. খাইরুন নাহার জানান, শীতকালীন রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন ডাইরিয়াসহ শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শীতকালীন বিভিন্ন রোগ থেকে শিশুদের রক্ষায় মায়েদের আতঙ্কিত না হয়ে শিশুদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, বাসি ও খোলা খাবার না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গরম কাপড় পরিধানসহ সচেতন থাকতে হবে।
গাইবান্ধা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ডাইরিয়া রোগীর জন্য ২০টি বেডের বিপরীতে প্রতিদিন ভর্তি থাকছেন ৫০ থেকে ৬০ জন। শিশু ওর্য়াডের ২০টি বেডের বিপরীতে ভর্তি থাকছেন ৫০ থেকে ৫৫ জন শিশু রোগী। এছাড়াও ২৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি থাকছে প্রতিদিন প্রায় ৩ শতাধিকের বেশি রোগী, যাদের মধ্যে শতাধিকের বেশি শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী।
লালমোহনে বেড়েছে নিউমোনিয়ার প্রকোপ
পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, বাড়ছে শীতজনিত রোগ