৫২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন চবির ৯ শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরুর ৫২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন ৯ শিক্ষার্থী। প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় উপাচার্যের হাত থেকে জুস পান করে তারা অনশন ভাঙেন। এর আগে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

অনশনে অংশ নেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল চবির সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহজাহান, নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে, পিসিবি সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র।

অনশনকারীদের দাবিগুলো হলো- স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহতদের তালিকা প্রকাশ ও উন্নত চিকিৎসা, নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসন ব্যবস্থা, আবাসনচ্যুতদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ, চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা ও নিরপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ, দ্বন্দ্ব নিরসনে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন ও তিন মাস পরপর বৈঠক করা, সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত, নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা এবং শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ।

অনশনকারী শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র বলেন, 'আমরা বুঝতে পারছি, আমাদের যে সপ্তম দাবি- প্রক্টোরিয়াল বডির পদত্যাগ- এটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরই অভিযোগ রয়েছে। আমি এখানে নিজে বসে আছি, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এখানকার কেউ দলীয় এজেন্ডা নিয়ে অনশনে বসেনি। গত ১১ মাসের প্রক্টোরিয়াল বডির কর্মকাণ্ডই প্রমাণ করে, ৩০ তারিখের ঘটনায় হাজারো শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরার জন্য মূলত তারাই দায়ী। শিক্ষার্থীরা বুঝতে পেরেছে, এই প্রক্টোরিয়াল বডির কাছে তারা নিরাপদ নয়। তাছাড়া, তারা নারী বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করে এবং ঘটনাস্থলে দেরিতে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দিতেও ব্যর্থ হয়।' 

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর)  বিকেলে অনশনস্থলে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইয়াহইয়া আখতার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেন। 

তিনি জানান, কোনো ধরনের প্রতিশ্রুতি তিনি দিতে পারবেন না; তবে আশ্বস্ত করেন যে শিক্ষার্থীদের সব দাবি আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করা হবে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

উপাচার্যের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আস্থা প্রকাশ করেন। পরে তিনি সবাইকে জুস খাওয়ালে প্রায় ৫২ ঘণ্টা পর তারা অনশন ভাঙেন। একই সঙ্গে তারা আগামী রোববার প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে সম্মত হন।