চিনির স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ায় অনেকেই এখন বিকল্প খুঁজছেন। সাধারণ মানুষের ধারণা, সাদা চিনি শরীরের ক্ষতি করলেও প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে মধু বা গুড় বেশ নিরাপদ। তবে পুষ্টিবিজ্ঞান বলছে ভিন্ন কথা। টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান জানিয়েছেন, মধু বা গুড় চিনির কোনো স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে না।
অনেকের ধারণা, প্রক্রিয়াজাত সাদা চিনির চেয়ে প্রাকৃতিক মধু অনেক বেশি উপকারী। অধ্যাপক শম্পা শারমিন জানান, মধুতে সামান্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও পুষ্টি উপাদান থাকলেও তার পরিমাণ খুবই নগণ্য। বরং মধুতে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি এবং এতে চিনির চেয়েও ক্যালরির মাত্রা কিছুটা বেশি থাকে। এটিও চিনির মতোই দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ডায়াবেটিস ও স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়।
শীতের মৌসুমে গুড় বেশ জনপ্রিয় হলেও ক্যালরির বিচারে এটি চিনির প্রায় কাছাকাছি। আখের গুড় হোক বা খেজুরের, এটিও রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। তাই স্বাদে কিছুটা ভিন্নতা আনলেও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুড় খুব একটা বড় ভূমিকা রাখতে পারে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাদা চিনি, মধু, গুড় বা কৃত্রিম চিনি সবই অতিরিক্ত গ্রহণে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। সুস্থ থাকার সেরা উপায় হলো মিষ্টি স্বাদের খাবার খাওয়ার অভ্যাস কমিয়ে দেওয়া। হুট করে চিনি ছাড়তে না পারলে ধীরে ধীরে খাবারের মিষ্টতা কমানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক শম্পা শারমিন। যেমন: চায়ে চিনির পরিমাণ কমিয়ে এক সময় তা চিনি ছাড়া খাওয়ার অভ্যাস করা।
চিনি বা মিষ্টি জাতীয় পানীয়র বদলে প্রয়োজনীয় ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত স্বাস্থ্যকর শস্য ও ফল থেকে। লাল চাল, লাল আটা, ওট বা যব রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায় এবং দীর্ঘ সময় শক্তি জোগায়। এছাড়া ফলের রসের বদলে গোটা ফল খাওয়ার অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি উপকারী।