অতিরিক্ত প্রোটিন সেবনে হতে পারে কিডনির ক্ষতি

বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফিটনেস ও বডি বিল্ডিংয়ের প্রবণতা বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রোটিনের অতিরিক্ত সেবন। আর এই প্রবণতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, অনেক তরুণকে দেখা যাচ্ছে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে, যাদের ক্রিয়েটিন লেভেল ১.৪১ বা ১.৫ এমজি/ডিএল।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, শিশুদের ক্ষেত্রে ১-৩ বছর বয়সে দৈনিক মোট ক্যালরির ২০ শতাংশ বা ১.০৫ থেকে ০.৮৫ গ্রাম/কেজি ওজন অনুযায়ী প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু বাস্তবে অনেকেই দিনে ২-২.৫ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন খাচ্ছে, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে সতর্ক করেছেন মুম্বাইয়ের জেন মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট নেফ্রোলজিস্ট ডা. বিশ্বনাথ বিল্লা।

তার মতে, ক্রিয়েটিন লেভেল ১.২ এমজি/ডিএল হলেও সেটা অনেকের জন্য উচ্চ মাত্রা বলে ধরা হয় এবং এর পেছনে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ দায়ী থাকতে পারে।

ডা. বিল্লা আরও বলেন, খাদ্য বা সাপ্লিমেন্ট উভয় উৎস থেকেই অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণে কিডনির ওপর চাপ পড়ে। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই কিডনির সমস্যা রয়েছে তারা বেশি সমস্যায় পড়েন। তরুণদের উচিত খাদ্যে প্রোটিনের উৎস ও পরিমাণ নিয়ে সচেতন হওয়া।

আরেক সিনিয়র কনসালটেন্ট ও নেফ্রোলজিস্ট বলেন, প্রোটিনের অতিরিক্ত গ্রহণ যদি অপর্যাপ্ত পানিপান বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়, তবে তা কিডনির ওপর আরো চাপ তৈরি করে। যার ফলে ক্রিয়েটিন লেভেল বেড়ে যায় এবং কিডনি স্ট্রেসের সংকেত দেয়।

তার মতে, তরুণদের শুধু প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ করাই যথেষ্ট নয়, তাদের উচিত নিয়মিত পানি পান করা এবং কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষাও করা। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ বা শরীরচর্চা করলে কিডনির স্বাস্থ্য নিয়মিত যাচাই করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন—
* প্রতিদিন ওজন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১.৮ গ্রাম/কেজি প্রোটিন গ্রহণ করুন।
* প্রোটিন পাউডার ১৪-১৫ বছর বয়সের আগে ব্যবহার করা উচিত নয়।
* সাপ্লিমেন্ট কেনার আগে লেবেল ভালোভাবে পড়ুন এবং ক্যাফেইন, সুগার, কৃত্রিম উপাদানবর্জিত প্রোডাক্ট বেছে নিন।
* পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করুন ও নিয়মিত কিডনি টেস্ট করান।

কিডনির সমস্যা প্রথম দিকে কোনো লক্ষণ না-ও দেখাতে পারে। তাই এখনই সচেতন হওয়াই ভবিষ্যতে বড় সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে। পাশাপাশি ডায়েট সাপ্লিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে আরো স্বচ্ছতা, থার্ড-পার্টি টেস্টিং ও মান নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন রয়েছে।

সূত্র : নিউজ ১৮