ছোলা বাংলাদেশি রান্নাঘরে খুব পরিচিত একটি উপাদান। রমজানে ইফতার থেকে শুরু করে সকালবেলার স্বাস্থ্যকর নাশতায়, ছোলার ব্যবহার চোখে পড়ে প্রায় সব ঘরেই। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই ছোট্ট ডালজাতীয় খাদ্যটিই হতে পারে আপনার প্রতিদিনের সুস্থতার গোপন সূত্র।
পুষ্টিবিদদের মতে, নিয়মিত সেদ্ধ বা ভেজানো ছোলা খাওয়ার অভ্যাস শরীরের ভেতর থেকে কাজ করে বহু রোগ প্রতিরোধে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ছোলা খাওয়ার কয়েকটি প্রমাণিত উপকারিতা:
হজমশক্তি বাড়ায়
ছোলায় রয়েছে উচ্চমাত্রার আঁশ (ফাইবার), যা হজমে সহায়তা করে। এটি পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে কার্যকর।
হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে
ছোলায় থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফোলেট হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
কম ক্যালোরি আর বেশি প্রোটিন ও আঁশ সমৃদ্ধ হওয়ায় ছোলা দীর্ঘ সময় পেট ভরাট রাখতে সাহায্য করে। এতে ক্ষুধা কম লাগে এবং ওজন কমাতে সহায়ক হয়।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
ছোলায় থাকা কম গ্লাইসেমিক সূচক (GI) ও জটিল কার্বোহাইড্রেট রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে বাড়ায়। ফলে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও নিরাপদ খাদ্য।
ব্রেইনের কার্যক্ষমতা বাড়ায়
ছোলায় থাকা ভিটামিন B6, ম্যাগনেশিয়াম এবং আয়রন স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উপকারী। নিয়মিত ছোলা খেলে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়তে পারে।
হাড় শক্ত করে
ছোলার মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে। নারীদের জন্য এটি বিশেষ উপকারী, বিশেষ করে মেনোপজের পর।
প্রাকৃতিক প্রোটিনের উৎস
বিশেষ করে নিরামিষভোজীদের জন্য ছোলা হলো এক অসাধারণ প্রাকৃতিক প্রোটিনের উৎস। শরীরের কোষ গঠনে ও পুনর্গঠনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কিভাবে খাওয়া যায়
- রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে খাওয়া যায়
- স্যালাড বা ছোলার চাট বানিয়ে
- ছোলা দিয়ে হালকা ভাজা বা ডাল হিসেবে
- রুটি বা পরোটার সঙ্গে নাস্তা হিসেবে
সতর্কতা
ছোলায় উচ্চমাত্রার আঁশ থাকায় একসঙ্গে বেশি খেলে গ্যাস ও অস্বস্তি হতে পারে। কিডনির সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য বেশি পরিমাণ প্রোটিন এড়ানো উচিত। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ছোলা যেন একপ্রকার প্রাকৃতিক মাল্টিভিটামিন! ব্যায়াম না করলেও প্রতিদিন একমুঠো ছোলা আপনার শরীরে তৈরি করতে পারে ভেতর থেকে প্রতিরোধশক্তির প্রাচীর। খাবারের তালিকায় এই ছোট উপাদানটি নিয়মিত রাখুন সুস্থ থাকুন, সতর্ক থাকুন!