সুস্থ থাকতে অনেকে আজকাল বিভিন্ন ধরনের ডায়েট মেনে চলেন, বিশেষ করে প্রোটিন-ভিত্তিক ডায়েট এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। অনেকের ধারণা, ওজন কমানো, মাংসপেশি গঠন বা শক্তি বাড়ানো সবকিছুর সমাধান একটাই, প্রোটিন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, কোনো কিছুর অতিরিক্তই যেমন ক্ষতিকর, তেমনি অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণও হৃদযন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
ভারতের কার্ডিওলজিস্ট ডা. দিমিত্রি ইয়ারণভ সতর্ক করেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত প্রোটিন বা এক্সট্রিম কার্নিভোর ডায়েট অনুসরণ করলে হৃদযন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এই ডায়েটে সাধারণত কেবল মাংসজাত খাবার খাওয়া হয়, যা শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।
তিনি বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, অনেক তরুণ যারা বাইরে থেকে একেবারে ফিট দেখান, তাদের শরীরের ভেতরের রক্তনালীগুলো ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত। আমি ৩৫ বছর বয়সী ফিট তরুণদেরও হার্ট অ্যাটাকের রোগী হিসেবে পেয়েছি, কোনো পূর্ব লক্ষণ ছাড়াই।’
ডা. ইয়ারণভের মতে, বছরের পর বছর কার্নিভোর বা উচ্চ প্রোটিন ডায়েটে থাকলে শরীরে দেখা দেয় বেশ কিছু জটিলতা-
- খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বেড়ে যায়
- রক্তনালীর আস্তরণ (Endothelium) ক্ষতিগ্রস্ত হয়
- দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ (Chronic inflammation) তৈরি হয়
- রক্তনালীর সংকোচন ঘটে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়
তিনি বলেন, ‘একটা ছয়-প্যাক শরীর তোমাকে হৃদরোগ থেকে বাঁচাতে পারবে না, যদি তোমার খাদ্যাভ্যাস তোমার রক্তনালী ধ্বংস করে দেয়।’
সুস্থ থাকার সঠিক উপায়
ডা. ইয়ারণভের পরামর্শ অতিরিক্ত ডায়েট নয়, ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসই সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি। তার মতে-
- প্রাকৃতিক ও সম্পূর্ণ খাবার খান
- যতটা সম্ভব উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্য বেছে নিন
- নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের ভেতর ও বাইরে দুই দিকের যত্নই সমান গুরুত্বপূর্ণ। ভুল খাদ্যাভ্যাস ধীরে ধীরে বড় রোগের কারণ হতে পারে। তাই কোনো ডায়েট শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস