দরজায় কড়া নাড়ছে শীত, আর এর আগেই গরম-শীতের অস্থির আবহাওয়ায় বাড়ছে সর্দিকাশি ও অ্যালার্জির প্রকোপ। মৌসুম পরিবর্তনের এই সময়টায় শুকনো কাশি, জ্বর, গলা খুসখুস ও ত্বকের অ্যালার্জি দেখা দিচ্ছে অনেকের শরীরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠান্ডা পড়ার শুরু থেকেই ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে, ফলে বাড়ে সংক্রমণ ও অ্যালার্জির ঝুঁকি।
চিকিৎসকেরা সতর্ক করে বলেছেন, অ্যালার্জির ওষুধ কখনোই নিজের ইচ্ছেমতো খাওয়া বা বন্ধ করা উচিত নয়। এসব ওষুধে থাকা অ্যান্টিহিস্টামিন উপাদান অনিয়ন্ত্রিতভাবে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, গলা শুকিয়ে যাওয়া ও মূত্রত্যাগের সমস্যার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা উচিত।
অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু সহজ উপায়-
গরম পানি ও ভাপ
যাদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতা আছে, তারা ঠান্ডা পানিতে নয়, বরং সামান্য গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। হালকা সর্দিকাশি দেখা দিলে লবণপানিতে গার্গল ও নিয়মিত গরম পানির ভাপ নিন।
বায়ু পরিশুদ্ধ রাখুন
ধুলাবালির কারণে অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে। ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। ঘরে যেন পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করে, তা নিশ্চিত করুন।
সূর্যালোক ও পরিচ্ছন্নতা
বাড়ির জানালা-দরজা খোলা রাখুন যাতে রোদ ঢোকে। নিয়মিত ঘর, পর্দা ও পোশাক পরিষ্কার রাখুন। এতে জীবাণু ও ধুলা জমে অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা কমে।
ভেষজ চা ও মধু
আদা, দারুচিনি, গোলমরিচ ও লবঙ্গ দিয়ে তৈরি চা অ্যালার্জি প্রতিরোধে সহায়ক। প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু খেলে গলা খুসখুস কমে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
টিকা ও চিকিৎসা
যাদের অ্যালার্জি দীর্ঘস্থায়ী বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তারা শীত শুরুর আগে চিকিৎসকের পরামর্শে ফ্লু বা নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
টকজাতীয় ফল, আমলকী ও অন্যান্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, অ্যালার্জি বা সর্দিকাশি দেখা দিলে অবহেলা না করে প্রাথমিক যত্ন ও চিকিৎসা নিলে শীতকালেও সুস্থ থাকা সম্ভব।