লাইফস্টাইল ডেস্ক : ডেঙ্গু জ্বর, ছোট একটা মশার কামড়ে হয়ে থাকলেও এর পরিণাম ভয়াবহ। যে কোনো বয়সেই হতে পারে এ জ্বর। এটি এমনই এক অনাকাঙ্ক্ষিত জ্বর যা মৃত্যু পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে মানুষকে। বিগত কয়েক বছরে এ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও কম না। সারা দেশে এ বছর ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ অতীতে যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি। এ জ্বরে মাথা ব্যাথা, শরীর ব্যথা, বমি, পেশিতে এবং গাঁটে ব্যথা, চামড়ায় লালচে দাগ এবং চোখের পেছনে দাগ দেখা যায়।
ডেঙ্গু সংক্রমণে অধিকাংশ সময় প্লাটিলেট সংখ্যার দ্রুত পরিবর্তন হয়। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের প্লাটিলেট সংখ্যা ২০,০০০ এর নিচে চলে যায়। যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের প্রতি মাইক্রোলিটার রক্তে প্লেটলেট সংখ্যা ১,৫০,০০০ থেকে ৪৫০,০০০ প্লাটিলেট থাকে। প্লাটিলেট কমে গেলে রক্তপাতের ঝুঁকি সর্বোচ্চ হয়। এ জ্বরে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। প্লাটিলেট বাড়ানোর জন্য শাকসবজি এবং ফলমূল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শাকসবজি এবং ফলমূলে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবারসহ বিভিন্ন উপাদান যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এমনি কয়েকটি শাক-সবজি এবং ফলমূলের কথা আপনাদের জানাবো, যা এ জ্বর থেকে আরোগ্য লাভে সাহায্য করবে।
পেঁপে : ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেঁপে রাখবেন। পেঁপেতে অ্যান্টি-অ্যান্টিঅক্সিডেণ্ট থাকায় এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেঁপের মধ্যে পাপাইন, সারকেইন, কাইমোপাপাইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলি ডেঙ্গুজনিত সংক্রমণ কমায়।
ডালিম : ডালিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্লাটিলেট কমে গেলে ডালিম খাওয়া জরুরি। এটি খেলে শরীরের ক্লান্তি দূর হয়।
পালং শাক : পালং শাকের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে। এই ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে কিছুটা সাহায্য করে। প্লাটিলেটের কাজ কিছুটা করে দেয় বলে সাময়িক রেহাই পায় শরীর। এ শাক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য উপকারী। পালং শাকে রয়েছে আয়রণ, ওমেগা-৩। এটি শরীরের দুর্বলতা কমিয়ে থাকে।
বিটরুট : বিটরুটে রয়েছে আয়রণ এবং ফলিক এসিড যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন করে। বিটরুট প্লেটলেট সংখ্যা বাড়ায়। একইসঙ্গে ভালো রাখে লিভারকে।
টক জাতীয় ফল : কমলা, লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি রক্তপাতের ঝুঁকি কমিয়ে প্লাটিলেট সংখ্যা বাড়ায়।
কুমড়া : কুমড়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে বা এ জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর খাদ্যতালিকার কুমড়া রাখা আবশ্যক।
কিউই ফল : এই ফলটি আমাদের দেশে অল্পবিস্তর পাওয়া গেলেও দাম বেশি হওয়ার কারণে ততটা প্রচলিত নয়। এ ফল শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এটি পটাসিয়ামের উৎসও বটে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।